কুড়িগ্রামের রৌমারী থানায় যাওয়ার পথে একটি হত্যা মামলার বাদীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রৌমারী-ঢাকা মহাসড়কের ঝগড়ারচর এলাকা থেকে শেখ ফরিদ (২৩) নামে ওই যুবককে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরে তিনি রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
শেখ ফরিদ (২৩) উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি বাবা রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলার বাদী।
রবিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা অবস্থায় শেখ ফরিদ বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যার দিকে আমার বাবার হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) এসআই তুহিন মিয়ার ডাকে রৌমারী থানায় যাচ্ছিলাম। রৌমারী-ঢাকা মহাসড়কের ঝগড়ারচর এলাকায় পৌঁছলে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের খেতারচর গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে সেলিম (৩৫), একই ইউনিয়নের আমবাড়ি গ্রামের মনিরুজ্জামানের ছেলে হাসান (৩০), দাঁতভাঙ্গা গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সবুজ মিয়া (৪০), শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি গ্রামের সমশের আলীর ছেলে চাঁন মিয়া (৫০) এবং একই এলাকার শহর আলীর ছেলে রহিম বাদশাহ (৪৫) আমাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে রৌমারী গ্রামের একটি বাড়িতে নিয়ে সারারাত শারীরিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে তারা আমার কাছ থেকে জোর করে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে আমি আহতাবস্থায় রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই।’
শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা জানিয়ে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মোক্তারুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘ওই রোগীর হাত-পা-সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে। তাকে নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
রৌমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তুহিন মিয়া বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার সঙ্গে ওই যুবক দেখা করবে বলে মোবাইল ফোনে জানিয়েছিলেন। পরে ওই দিন আর দেখা হয়নি। রবিবার সকালে ঘটনা জানার পর হাসপাতালে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছি।’ তবে নিজ থেকে ওই যুবককে থানায় ডাকার কথা অস্বীকার করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু মো. দিলওয়ার হাসান ইনাম বলেন, ‘কী নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’