X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জুয়েলকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগই ‘কিশোর’!

মোয়াজ্জেম হোসেন, লালমনিরহাট
০৪ নভেম্বর ২০২০, ২০:৩৮আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২০, ২০:৪১

বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। এই ভবনের দরজা ভেঙে এখানেই জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে গত ২৯ অক্টোবর আবু ইউনুস মো. শহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় উন্মত্ত জনতা অংশ নেয় বলা হলেও এদের সিংহভাগই ছিল কিশোর। ওই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই নিজেদের মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেন। এমন অনেক ভিডিও বিশ্লেষণ করে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভিডিওগুলোতে জুয়েলকে বেধড়ক পিটিয়ে মেরে ফেলা এবং প্রকাশ্যে রাস্তায় গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মরদেহ পুড়িয়ে নিঃশেষ করা পর্যন্ত যাদের চেহারা দেখা গেছে তাদের প্রায় ৬৫ শতাংশই ছিল কিশোর!

বুড়িমারীর বড় জামে মসজিদে আসরের নামাজ পড়েছিলেন আবু ইউনুস মো. শহিদুন্নবী জুয়েল (৫০)। মাগরিবের আজান যখন হয় ততক্ষণে কোরআন শরিফ অবমাননার গুজব ছড়িয়ে বুড়িমারী  ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলে উন্মত্ত লোকজন। তখন বাইরে অনেকেই পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে তর্ক, হামলা আর নানা ধরনের কথা ও স্লোগান দিয়ে উত্তেজনা ছড়ালেও ভেতরে সক্রিয় অংশ নেয় অল্প কয়েকজন। তবে ভিডিও দেখে তাদের সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। এর যতগুলো ভিডিও দেখা গেছে, তাতে অনেক কিশোরকে উল্লাসের সঙ্গে জুয়েলের শরীরে একের পর এক আঘাত করতে দেখা গেছে। সাপ মারার মতো উন্মত্ত হয়ে জুয়েলের গায়ে আঘাত করা হয়।  অসংখ্য আঘাত। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ভেতরেই একটি কণ্ঠে শোনা যায় ‘পোড়ায় দে’। এরপরের ঘটনা আরও নির্মম। নিহত জুয়েলের দুই হাত, গলায় ও কোমরে রশি লাগিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে প্রায় ৪২০ মিটার দূরে নিষ্ঠুরভাবে টেনেহিঁচড়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের বুড়িমারী প্রথম বাঁশকলের মেসার্স জয় ট্রেডার্সের সামনে নেওয়া হয়। এই লাশ টানার কাজেও দেখা গেছে কিছু কিশোর-যুবককে। সেখানেই মহাসড়কের ওপর লাশ রেখে টায়ার, কাঠখড়ি ও পেট্রোল ঢেলে তা পোড়ানো হয়। একজন মুসলমান, যিনি আসরের নামাজে অংশ নিয়েছিলেন, সেই মসজিদ থেকেই তাকেই টেনেহিঁচড়ে বের করে মাগরিবের সময় কোরআন অবমাননার গুজবে হত্যা করা হয়। এরপর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার সময় জিহাদি জোশে ‘নারায়ে তকবির’ স্লোগান দেওয়া হলেও মুসলমানের মরদেহ পোড়াতে কেউ সেখানে বাধা দেননি। ভিডিওতে দেখা যায়, জুয়েলের মরদেহ পোড়ানোর কাজেও সেই কিশোর ও কিছু যুবক জড়িত। এই কিশোরদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ আর তরুণ-যুবকদের বয়স ১৮ থেকে ৩০-এর মধ্যে।

ওই ইউনিয়ন পরিষদের এক জনপ্রতিনিধির সরবরাহ করা ৩৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ বাংলা ট্রিবিউনের হাতে এসেছে। বীভৎসতার কারণে বর্ণনার অযোগ্য ৩৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একদল কিশোর লাশটি টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের মুখে ধর্মীয় স্লোগান। তবে এসব কিশোরের বেশিরভাগই স্থানীয়দের অচেনা। তাদের পরিচয় উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তারা একক সিদ্ধান্তে এমন কিছু করেছে তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। ফলে ধারণা করা যায়, উপস্থিত জ্যেষ্ঠদের আচরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়েই তারা এমন কাজে অংশ নেয়।

একটি ভিডিওতে দেখা যায় এভাবেই হত্যার পর জুয়েলের লাশ দড়ি বেঁধে টেনে আনা হয়। এতে যারা অংশ নেয় তাদের বেশিরভাগই কিশোর ও তরুণ। তাদের পেছনে দৌড়াচ্ছে বিশাল জনতা। এক কিশোর মৃতদেহের ওপরে লাফ দিচ্ছে। আরও কয়েকজন সারাটা পথ মৃতদেহকে পেটায়।

বুড়িমারীর রাজনৈতিক নেতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী বুড়িমারী স্থলবন্দরকে কেন্দ্র করে পুরো বুড়িমারী ইউনিয়নটিই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এ ইউনিয়নের বুড়িমারী প্রথম বাঁশকল এলাকায় স্থলবন্দর ট্রাকস্ট্যান্ড দালাল অফিসকে ঘিরে নিয়মিত ঘটে নানা অপরাধ। এখানেই এসব কাজে গত ৭/৮ বছর ধরে কিশোর-যুবকদের সংগঠিত করে ব্যবহার করছে একটি গোষ্ঠী। তবে অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারও সাহস নেই বুড়িমারীতে। ঠিক এই জায়গাটির সামনের রাস্তাতেই লাশটি টেনেহিঁচড়ে এনে পোড়ানোর ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা ছিল কিনা সেটি যাচাই করার ব্যাপারে তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে ওই অফিসে গিয়ে কথা বলার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আবু ইউনুস শহিদুননবী জুয়েল

লাশ পোড়ানোর সিদ্ধান্ত ও জায়গা নির্ধারণ করলো কারা?

যখন ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষের ভেতরে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছিল সেখানে হামিদুল ইসলাম (৫৩) নামে পাকা দাড়ি-চুলঅলা এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে। জুয়েলের মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার পিঠে বেধড়ক পেটাচ্ছিলেন তিনি। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর এই ব্যক্তি প্রথম লাশটির ঘাড়ের কাছে জামা ধরে টেনে বের করার চেষ্টা করেন। এ সময় অপর একজন পাঞ্জাবি ও টুপি পরা ব্যক্তি এগিয়ে এসে এ কাজে অংশ নেন। এরপরেই টেনেহিঁচড়ে নেওয়ার কাজে যোগ দেয় সেখানে থাকা কিশোররা। অর্থাৎ লাশ বের করার কাজে ইন্ধন দেন হামিদুল ও পাঞ্জাবি পরা ওই ব্যক্তি। তবে এই হামিদুল ঘটনার সঙ্গে কীভাবে সম্পৃক্ত হলেন সেটা জানাও খুব জরুরি। কারণ, হোসেন ডেকোরেটরের মালিক আবুল হোসেন যখন মসজিদের বাইরে জুয়েলকে বের করে নিয়ে আসে তখন ছিলেন যে পাঁচজন, তার মধ্যে এই হামিদুল ছিল না। আবার মেম্বারের উপস্থিতিতে যখন জুয়েলকে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় তখন এই হামিদুল সঙ্গে থাকার কথা বলেননি আবুল হোসেন। তাহলে ভিডিও অনুযায়ী, এই হামিদুল প্রত্যক্ষভাবে  জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যায় কীভাবে অংশ নিলেন, বাকি কিশোররা তার পরিচিত কিনা, তাদের কেউ পাঠিয়েছিল কিনা এসব বিষয়ও যাচাই করা জরুরি। 

বুড়িমারী বাজার এলাকার একজন প্রবীণ ব্যক্তি নজরুল ইসলাম (৭৬)। তিনি এখনও বুড়িমারী বাজারে প্রতিদিন চলাফেরা করেন। স্নাতক পাস ও রাজনৈতিকভাবে সচেতন এই ব্যক্তি সেদিনের ঘটনার দৃশ্য দেখে দুঃখপ্রকাশ করে মর্মাহত কণ্ঠে বলেন, ‘গত ৩০ মার্চ বুড়িমারীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে এসেছিলেন পাটগ্রামের এসিল্যান্ড। হঠাৎ তাকেও ঘেরাও করে ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে নিয়ে যায় শত শত কিশোর-যুবক। ভিডিও ফুটেজে দেখেছিলাম, করোনার কারণে মসজিদ বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে ওই সময়েও এরাই মসজিদ খুলে দেওয়ার দাবিতে প্রকম্পিত করেছিল ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ। কিন্তু, মসজিদে নামাজ পড়ার সময় এদের উপস্থিতি তেমন একটা চোখে পড়ে না। গত ২৯ অক্টোবর যে বর্বরোচিত ঘটনা ঘটলো সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজেও দেখেছি সেই কিশোর-যুবকদের। কিন্তু তারা কারা? তাদেরকে কে বা কারা পরিচালিত করছে? এটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।’

মানুষকে মসজিদ থেকে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যার পর প্রাশ্য রাস্তায় দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার এমন বীভৎসতা আগে স্মরণকালে আর ঘটেনি বাংলাদেশে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওইদিনের ঘটনা দেখা এক কিশোর বলে, ‘আমি কোনও কিছু করি নাই। সবাই যখন যাচ্ছিল আমিও সেখানে দেখতে গিয়েছি। কিন্তু এমন নির্মম ঘটনা দেখতে হবে- এটা জানা ছিল না। চোখের সামনে ঘটনাটা ভেসে উঠলে সেদিন থেকে হঠাৎ হঠাৎ আমার ভয় লাগে।’

ওই কিশোর এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘এ কলঙ্কজনক অধ্যায় থেকে বুড়িমারীকে মুক্ত করতে হলে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ যেমন দরকার, তেমনি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দরকার।’  

বুড়িমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা ও প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘পারিবারিক শৃঙ্খলা বা শাসন এবং কর্মসূচিভিত্তিক আদর্শিক ছাত্র রাজনীতি না থাকায় এসব ঘটনা বারবার দেখতে হচ্ছে। বিশেষ করে কিশোরদের হাতে মোবাইল ফোনের বিস্তারে পরিবেশ আরও ভয়াবহ করে তুলছে। এজন্য সামাজিক অপরাধের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে প্রত্যেক পরিবারের উচিত তার সন্তান ভার্চুয়াল মিডিয়ায় কোথায় যায়, কী করে তা নজরদারির মধ্যে রাখা। কিন্তু, কয়জনইবা এ কাজটুকু করে। আর বেশিরভাগ বয়স্ক বাবা-মা তো স্মার্টফোন ব্যবহারই করতে জানেন না। ফলে সমাজে কিশোর অপরাধ বাড়ছে। ইন্টারনেট থেকে কিশোরদের কীভাবে দূরে রাখা যায় এবং অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা যায়, এসব নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।’ 

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, ‘গ্রেফতার করা একজন কিশোরের সঙ্গে কথা বলেছি। কেউ একজন ডাকলে অনেকটা হুজুগে ঘটনায় অংশ নেয়। ধর্ম নিয়ে ওই কিশোরের তেমন কোনও জ্ঞান নেই।’

অধিকাংশ কিশোর বা যুবকের অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অপরাধটাকে সামনে রেখে আসামিদের গ্রেফতার করছি। তবে এক্ষেত্রে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে কাজ করতে হচ্ছে, যেন কোনও অপরাধী পার না পায় এবং কোনও নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হয়।’   

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা মনোবিদ সিরাজুম মনিরা বলেন, ‘আমাদের মস্তিষ্কের যে গঠন যেমন অ্যাকটিভিটি, কাজকর্ম, সিদ্ধান্ত সবকিছু আমাদের ব্রেইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আর ব্রেইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশের বিকাশ বা মেইন ডেভেলপমেন্ট ঘটে তৃতীয় ধাপে অর্থাৎ সাত থেকে ২২ বছর বয়সের মধ্যে। একটা শিশুর বেড়ে ওঠা, তার কৈশোর ও তারুণ্যের পুরো ধাপটাতেই ব্রেইনের বা মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটতে থাকে। ফলে কী শিখছি তার পুরোটাই নির্ভর করে এই সময়কালের কর্মকাণ্ডের ওপরে। আমাদের কপালের অংশে মস্তিষ্কের ডেভেলপমেন্টটা এ বয়সে বেশি হতে থাকে। এর মাধ্যমেই আমরা আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা করা, এই কঠিন কঠিন কাজগুলো করতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ কারণেই এই সময়ে বিপজ্জনক কাজ করার প্রবণতাও থাকে। যার ফলে কিশোরদের নানা ধরনের ভুল পথে চলে যাওয়া, মাদকাসক্ত হওয়া, খারাপ বন্ধুত্বে জড়িয়ে পড়া, অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে আকৃষ্ট হওয়ার ঘটনাগুলো ঘটছে। এসব কাজ একজন থেকে আরেকজনকে প্রভাবিত করে খুব সহজেই।’

জাতীয় মানবাধিকার কমিটির তদন্ত দল পরিদর্শন করছে জুয়েলের মরদেহ পোড়ানোর ঘটনাস্থল।

তিনি আরও বলেন, ‘কিশোর বা যুবক বয়সে খুব বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা কম থাকে। এ বয়সে তারা হুটহাট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। উত্তেজিত থাকে খুব বেশি। এই জিনিসগুলোর কারণে দেখা যায়, যদি সঠিক উপায়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে তারা হুট করে নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে যায় কোনও বিবেচনা ছাড়াই। তাই তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হলে রাষ্ট্রের সব অঙ্গগুলোকে একটা ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনতে হবে। আর আমাদের কিশোর বা যুবকদের মধ্যে মানবিকতা, নৈতিকতা, পারিবারিক, ধর্মীয় অনুশাসন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিকাশের মূল্যবোধেও কিন্তু ক্ষয় ধরেছে। এগুলো কমে যাওয়ার কারণে কিন্তু অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। এটা যে চোখ দিয়ে আমরা সরাসরি দেখতে পারবো কেন ঘটেছে তা কিন্তু নয়। এটা বহুমুখী জায়গা থেকে আমাদের দেখতে হবে।’

মনিরা আরও বলেন, ‘কিশোর বা যুবকদের কোনও কিছু খুব সহজে বোঝানো যায়। যেহেতু ব্রেইনের ওই জায়গাগুলো তাদের পরিপূর্ণ নয়, ফলে তারা অতি দ্রুত কনভিন্স (অনুগত) হয়ে যায়। মাল্টিপল জায়গা থেকে বা ভিন্ন দৃষ্টিপাত থেকে ভাবার দক্ষতা থাকে না। ফলে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করার প্রবণতা থাকে। হয়তো সেখানে কিশোর বা যুবকরা এমনটা করতে পারে বলে আমার মনে হয়।’

জানতে চাইলে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, আসলে বিষয়টি কী ঘটেছিল সেই প্রকৃত কারণ জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া ঘটনায় অংশ নেওয়া কিশোর বা যুবকদের কারা ব্যবহার করেছিল সেটাও খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

এমন ঘটনায় শিশু কিশোরদের ব্যবহারের প্রসঙ্গ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে যারা পড়াশোনা করেছেন বা গবেষণা করেন, তারা হয়তো ভালো বলতে পারবেন। তবে আমার কাছে মনে হয় কোনও গোষ্ঠী তাদের ব্যবহার করে থাকতে পারে। আবার সচেতনতার অভাবে এবং অর্থের জন্য প্রলুব্ধ হয়েও তারা সামাজিক অপরাধ করতে পারে। নতুবা ধর্মীয় গোঁড়ামি কিংবা পড়াশোনার ঘাটতি থেকে এমন হতে পারে। তবে এ বিষয়ে স্থির কোনও সিদ্ধান্ত দেওয়া বা কারণ ব্যাখ্যা করা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়।

উল্লেখ্য, জুয়েলকে হত্যা, ইউনিয়ন পরিষদ অফিস ভাঙচুর ও পুলিশ-প্রশাসনকে কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়ায় তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের ১১ জনই কিশোর। 

আরও পড়ুন:

পালিয়ে গেছে হোসেন ডেকোরেটরের মালিক?

কোরআন অবমাননার কোনও প্রমাণ মেলেনি: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি

হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ৩ মামলায় গ্রেফতার ৬ 

ফোর্স থাকলে দুই জনকেই রেসকিউ করতে পারতাম: পাটগ্রাম ইউএনও

জুয়েলের বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার প্রমাণ মেলেনি: গোয়েন্দা প্রতিবেদন

বুড়িমারীতে জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা (ভিডিও)

‘জুয়েলকে মসজিদের বাইরে আনার পর পরিস্থিতি এমন হবে ভাবিনি’

হত্যার পর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি স্বজনদের

লালমনিরহাটে যুবককে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ

পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

 যুবককে হত্যার পর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় একাধিক মামলা হবে

পিটিয়ে হত্যার পর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার ছায়া তদন্তে র‍্যাব

 

 

/টিএন/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
তাইওয়ানের কাছে আবারও সামরিক কার্যকলাপ চালালো চীন
তাইওয়ানের কাছে আবারও সামরিক কার্যকলাপ চালালো চীন
বাগেরহাটে ট্রাকচাপায় দুই ভাইসহ ৩ ভ্যানযাত্রী নিহত
বাগেরহাটে ট্রাকচাপায় দুই ভাইসহ ৩ ভ্যানযাত্রী নিহত
শিল্পীদের সমস্যাগুলো সংসদে চিহ্নিত করতে চাই: ফেরদৌস
শিল্পীদের সমস্যাগুলো সংসদে চিহ্নিত করতে চাই: ফেরদৌস
বেসিস নির্বাচন: সদস্যদের জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল করতে চান সহিবুর রানা
বেসিস নির্বাচন: সদস্যদের জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল করতে চান সহিবুর রানা
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!