গত ৩০ বছর থেকে চলছে বাটোয়ারা মামলার চালাচ্ছেন আজিজ মীর। মামলা যখন করেছিলেন তখন তার বয়স ছিল ৫০, এখন ৮০ বছর। বাদীর আশঙ্কা,তিনি হয়তো মামলার রায় দেখে যেতে পারবেন না।
নাটোরে সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের মদন হাট গ্রামের আজিজ মীর জানান, তার শ্বশুর ময়েজ উদ্দিন প্রামাণিক স্বাধীনতা যুদ্ধের পরপরই সিংড়া উপজেলার লালোর গ্রামে ১ একর ৩৫ শতক জমি পত্তন নেন। আয়েজ উদ্দিনের মৃত্যুর পর ৩ মেয়ে আসমা, নেহার ও আমেনা ছাড়াও মা কুলসুম বেগম জীবিত ছিলেন। অংশ মোতাবেক তার স্ত্রী আসমা বিবি ৪৫ শতক জমির মালিক। বাবার মৃত্যুর পর তিন বোন জমির খাজনা দেওয়ার জন্য আমেনার স্বামী জব্বার প্রামাণিককে দায়িত্ব দেয়। কিন্তু খাজনা দেওয়ার পরিবর্তে জব্বার ওই জমি নিজের নামে খারিজ করে। এরপর অন্যান্য শরিকরা তার কাছে বিক্রি করেছে মর্মে একটি জাল দলিল করে। এ ঘটনায় ১৯৮৮ সালে নাটোর মুন্সেফী আদালতে বণ্টননামা মামলা দায়ের করা হয়। শুনানি শেষে আদালত আসমা বিবির পক্ষে ৪৫ শতক জমি দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ২০০৫ সালে।
কিন্তু অন্যান্য ওয়ারিশরা সিভিল রিভিশন করে দাবি করে,১ একর ৩৫ শতক জায়গার স্থলে ১ একর ৪৫ শতক জমি হবে যা সিএস রেকর্ডে উল্লেখ আছে। এই দাবির শুনানির মধ্যেই আসমা বিবি ২০১৪ সালে মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর শোক আর বয়সের ভারে ন্যুব্জও আজিজ মীর জানেন না মামলার রায় কবে হবে। তিনি স্ত্রীর জমির পাওনা বুঝে নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারবেন কিনা।
তার দাবি করেন, শ্বশুড়ের মৃত্যুর পরপরই স্ত্রীসহ তিনি মদনহাট এলাকায় বসবাস করতে থাকেন। নিজ আয় আর পরিশ্রমে তিনি অনেক জমি কিনেছেন। বাড়িঘর করেছেন। কিন্তু স্ত্রীর বাবার সম্পত্তি পাওয়ার খুশি দেখতে পারেননি।
যোগাযোগ করা হলে মামলার কুশলী অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার জানান, মামলার শুনানি শেষ হয়েছে দু’মাস আগে। এখন শুধু রায়ের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। নাটোর যুগ্ম জেলা জজ আদালতে নতুন বিচারক এসেছেন। তিনি মামলার রায় দেবেন এই অপেক্ষায় রয়েছি। তবে কত তারিখে মামলার রায় হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।