X
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫
২১ আষাঢ় ১৪৩২

ব্যবসায়িক পার্টনারকে ইনজেকশন দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার

বগুড়া প্রতিনিধি
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২২আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২২

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেলিম হোসেনকে (২৫) চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে হত্যা অভিযোগে গ্রেফতার ব্যবসায়িক পার্টনার সাদ্দাম হোসেন (২৬) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্চিতা ইসলামের কাছে এ স্বীকারোক্তি দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম এ তথ্য  নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ক্লিনিক ব্যবসার মালিকানা নিয়ে বিরোধ ও পাওনা বঞ্চিত করার ক্ষোভে তিনি সেলিম হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে শরীরে চেতনানাশক প্রয়োগ করে হত্যার কথাটি আদালতে বলেছেন। জবানবন্দি শেষে আসামিকে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদরের পীরগাছা বাজারে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকের মালিকানা নিয়ে অংশীদার কাম নার্স সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে সহযোগী শাহিন আলম ও তার ভাই সেলিম হোসেনের (ব্যবস্থাপক) বিরোধ সৃষ্টি হয়। প্রায় দুই মাস আগে শাহিন আলমকে চেতনানাশক
পুশ করে হত্যার অভিযোগ উঠে। কোনও প্রমাণ না থাকায় ঘটনাটি চাপা পড়ে। সাদ্দাম হোসেন গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের জিন্নাহ মিয়ার ছেলে। নিহত সেলিম একই উপজেলার আটবাড়িয়া গ্রামের আবদুস সাত্তারের ছেলে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্লিনিকে থাকা অবস্থায় সেলিম অসুস্থতা বোধ করেন। তখন সাদ্দাম হোসেন জানান, তার (সেলিম) উচ্চ রক্তচাপ আছে, হাসপাতালে নেওয়া দরকার। সেলিমকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের চতুর্থ তলায় মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। রাত ১২টা ৫ মিনিটে সাদ্দাম হোসেন হাসপাতালে সেলিমকে দেখতে যান। এ সময় তার শরীরে স্যালাইন চলছিল। সবাই ব্যস্ত থাকার সুযোগে সাদ্দাম হোসেন তার পকেট থেকে ইনজেকশন বের করে সেলিমের হাতে লাগানো ক্যানোলা দিয়ে পুশ করেন।

কিসের ইনজেকশন দেওয়া হলো জানতে চাইলে সাদ্দাম জানান, গ্যাসের ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে। সে অ্যাম্পুলের লেবেল ছিঁড়ে ফেলে হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করে। এর ১০ মিনিটের মধ্যে সেলিম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তখন কর্তব্যরত নার্স ও অন্যরা সাদ্দাম হোসেনকে চেতনানাশক ইনজেকশনের অ্যাম্পুলসহ আটক করে পুলিশে দেয়। এ বিষয়ে নিহতের ভাই আবদুস সামাদ সদর থানায় সাদ্দামের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

সেলিমের ভাই আবদুস সামাদ জানান, তারা সাতজন প্রায় ৯ মাস আগে পীরগাছা বাজারে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন। সাতজনের মধ্যে তাদের পরিবারের চারজনের অর্ধেক এবং বাকি অর্ধেক শেয়ার সাদ্দাম হোসেনের ছিল। তাদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন নার্সের (সেবক) এবং সেলিম ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতেন।

তিনি আরও জানান, গত ৭ জুলাই তার আরেক ছোট ভাই শাহিন আলম অসুস্থ হলে পীরগাছা বাজারের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্যালাইনের মাধ্যমে ইনজেকশন পুশ করার পর রাতে তার মৃত্যু হয়। পরে বলা হয়, হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে। তখন শাহিনের মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে সন্দেহ করা হয়নি। সেলিমকে একই কায়দায় হত্যা করেছেন সাদ্দাম হোসেন।

এদিকে, তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামীম জানান, শনিবার বিকালে তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্চিতা ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। সন্ধ্যার দিকে সাদ্দাম হোসেন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

/এফআর/
সম্পর্কিত
বৈদেশিক মুদ্রা ডাকাতি: একজন কারাগারে, রিমান্ডে ৫  
‘ভাইরাল আলভি’সহ গ্রেফতার ৪ জন কারাগারে
জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো ৩ জন কারাগারে
সর্বশেষ খবর
শিগগিরই চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে: খাদ্য উপদেষ্টা
শিগগিরই চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে: খাদ্য উপদেষ্টা
গিলের রেকর্ড ছোঁয়ার দিনে ভারতের দাপট
গিলের রেকর্ড ছোঁয়ার দিনে ভারতের দাপট
৯ জনের দল নিয়েও বায়ার্নকে হারিয়ে সেমিতে পিএসজি
৯ জনের দল নিয়েও বায়ার্নকে হারিয়ে সেমিতে পিএসজি
পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিল বের হবে সকাল ১০টায়
পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিল বের হবে সকাল ১০টায়
সর্বাধিক পঠিত
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
‘নতুন করে লিখতে আপত্তি নেই, তবে এটি এখনও বিশ্বের সবচেয়ে ভালো সংবিধানের একটি’
‘নতুন করে লিখতে আপত্তি নেই, তবে এটি এখনও বিশ্বের সবচেয়ে ভালো সংবিধানের একটি’