আগামীকাল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজশাহী শহরের মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশের কয়েকদিন আগে থেকেই রাজশাহীতে আসতে শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। মঞ্চ তৈরি কাজ অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মীদের ঢল নামে। তবে এখনও সমাবেশস্থল রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠে কোনও নেতাকর্মীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। মাঠের অভ্যন্তরে ও বাইরে পোশাকে, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠ ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পাশে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে তাবু টানিয়ে নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ। এ ছাড়া ঈদগাহ মাঠের সামনের রাস্তা, মুক্তমঞ্চ ও পাশের রাস্তাগুলোতে অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। মাঝেমধ্যেই স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তুলছেন চারপাশ।
বগুড়া থেকে বিএনপি নেতা আশরাফ আলীসহ আরও ১০-১২ জন বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে এসেছেন। তিনি জানান, কয়েকবার ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পুলিশ তাদের ভেতরে ঠুকতে দেয়নি। তবে আগামীকাল (শনিবার) কোন বাধা তাদের দমাতে পারবে না।
এদিকে, আট শর্তে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যার একটি শর্ত হচ্ছে শনিবার দুপুর ২টা থেকে শুরু করে ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে।
দুপুর ২টার আগে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে প্রবেশ করবে কি না? এমন প্রশ্নে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, সমাবেশস্থলে যেকোনও সময় তারা প্রবেশ করতে পারেন। এখন যে জনস্রোত তা দেখে ওরা ভয় পাচ্ছে। আর তারা কখন সমাবেশস্থলে প্রবেশ করবেন তা সময়ই বলে দেবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. রফিকুল আলম জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপিকে সমাবেশ করতে হবে।
এদিকে শনিবার সকাল থেকেই সমাবেশ শুরু করতে চান বিএনপি নেতারা। তবে এখনও সমাবেশের মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ পুরোপুরি শেষ করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাদের দাবি, এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, অনুমতি পেতে দেরি হওয়ায় মঞ্চ প্রস্তুত হতে সময় লাগছে। তবে রাতের মধ্যেই মঞ্চ পুরোপুরি প্রস্তুত হবে বলে আশা তাদের।
শুক্রবার দুপুরে মাদ্রাসা মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন মঞ্চ প্রস্তুতকারী কর্মীরা। মাদ্রাসা মাঠের মূল মঞ্চের সঙ্গে কাঠ জোড়া দিয়ে কিছুটা বড় করা হয়েছে। সেখানে এখন তৈরি করা হচ্ছে বাঁশের ফ্রেম। পাশেই আরও একটি মঞ্চ তৈরি শেষ। সেখানে টানানো হচ্ছে শামিয়ানা।
মাঠজুড়ে রয়েছে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা। মঞ্চ বানানো শ্রমিক ছাড়া সেখানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। গণমাধ্যমকর্মীরা পরিচয় নিশ্চিত করার পর মাঠে ঢুকতে পারছেন। তবে পরিদর্শনের জন্য বিএনপির সিনিয়র নেতারা কিছু সময়ের জন্য প্রবেশ করতে পারছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আমরা আগে থেকেই মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওই সময় পুলিশ আমাদের কাজ করতে দেয়নি। বৃহস্পতিবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৮০ ভাগ কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে। রাতেই মঞ্চ প্রস্তুত হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সকাল ৯টা থেকে সমাবেশ শুরু করতে চাই। পুলিশ আমাদের যে সময় সমাবেশ শুরু করতে বলেছে, সেটি করলে আমাদের সমাবেশই হবে না। বিভাগীয় সমাবেশ কি দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত করা সম্ভব?