রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয়টি বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়েছিল। এসব দণ্ড স্থাপনের পর অনেক যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। এতে সরকারের অর্থ খরচ হলেও বাস্তবে কোনও কাজে আসছে না বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহীর গণপূর্ত বিভাগ সূত্র বলছে, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছয়টি ভবনের ছাদে ছয়টি বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড স্থাপনের জন্য ২০২২ সালের ১৭ মে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজটি পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাবর অ্যাসোসিয়েটস। কাজের চুক্তি মূল্য ছিল ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৪ টাকা। মেয়াদ ছিল ২১ দিন।
চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালের প্রধান ভাণ্ডার (স্টোর) ভবন, হাসপাতালের ২৫, ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড ভবনের ছাদে একটি করে এবং প্রশাসনিক ভবনের ছাদে দুটি বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়। এসব দণ্ডের সঙ্গে মূল্যবান তার ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সংযুক্ত করা হয়েছিল। একই বছরের জুনে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কাজ বুঝিয়ে দেয়। এরপর কত দিন এসব দণ্ড কার্যকর ছিল, তা জানা যায়নি।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ভবনের ছাদ, প্রধান ভাণ্ডার ভবন ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ড ভবনের ছাদে বজ্রপাত নিরোধক দণ্ডটির আকাশের দিকে তাক করানো থাকলেও দণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা পাইপের ভেতরে মূল্যবান তার নেই। অন্যান্য যন্ত্রাংশও চুরি গেছে।
এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আয়াতুল্লাহ বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। কোনও যন্ত্রাংশ চুরি হলে সেখানে আমাদের কিছু করার নেই।
রামেক হাসপাতালের ইএমও ইনচার্জ ডা. শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, এ যন্ত্রগুলো সাবেক পরিচালকের আমলে স্থাপন করা হয়েছে। এটি সচল আছে কি না সেটা বর্তমান পরিচালক জানেন না। চুরির বিষয়টিও জানা নেই এবং কেউ অভিযোগও করেননি। এটা গণপূর্ত বিভাগ দেখে। তবে হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন, গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে বসে এটা কীভাবে নতুন করে আপডেট করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা নেবেন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ জানান, তিনি আসার পরে এসব দেখতে পাননি। হাসপাতালে চোরের উপদ্রব রয়েছে। কিছুদিন আগে আনসার সদস্যরা আট জন নারী পকেটমারকে আটক করেছেন। পকেটমাররা ফরিদপুর থেকে রাজশাহীতে এসেছিলেন। তাদের থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।