বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের সমমনা শিক্ষকদের সঙ্গে অধ্যক্ষের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগে আট শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে ৫৮ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা হয়েছে। শহরের লতিফপুর কলোনি এলাকার টি এম মামুন নামে এক অভিভাবক মামলাটি করেন।
গত কয়েকদিন ক্লাস বন্ধ ও শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলির ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তারা এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান মামলার তথ্য দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের বাংলা বিভাগের
সহকারী শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক, ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মাহবুবুর আলম টুটুল, ইসলাম শিক্ষার ইসরাফিল হোসেন, আইসিটির জহুরুল ইসলাম, সাধারণ শিক্ষক আবু হানিফা, গণিতের সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম ও বাংলা বিভাগের প্রভাষক আনিসুজ্জামান।
পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অনিয়মিতসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিয়াম ফাউন্ডেশন থেকে প্রতিষ্ঠানের নৈশপ্রহরী মাসুদ রানাকে অন্য জেলায় বদলি করে। তার বদলির সূত্র ধরে অধ্যক্ষ মুস্তাফিজার রহমান বিরোধী শিক্ষকরা সুযোগ নেন। তারা নৈশপ্রহরীর পক্ষ নিয়ে প্রতিষ্ঠান সরকারি করার দাবি তোলেন। গত ২৮ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে ওই সব শিক্ষক ক্লাস বর্জন করেন। এরপর তাদের অনুসারী কিছু ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে প্রতিবাদ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা কলেজের ভেতরে ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন। এ সময় কয়েকজন অভিভাবক ও শিক্ষার্থী আঘাত এবং জখমপ্রাপ্ত হন।
স্কুলের বাস চালক ওয়াজেদ আলী, আবদুল মান্নান ও নুরু মিয়া আহত হয়েছেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। আঘাত পাওয়া এক শিক্ষার্থী বমি করে
অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার অভিভাবক টি এম মামুন বাদী হয়ে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) ২০০২ সালের ৪/৫ ধারা ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় সদর থানায় শিক্ষক ও অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সদর থানার ওসি এস এম মঈনুদ্দীন জানান, তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে
আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাফিজার রহমান জানান, এক অভিভাবক থানায় কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এটা শুনলেও কে বাদী ও কারা আসামি সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন।
গত কয়েকদিন ধরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বগুড়ার জেলা প্রশাসক ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হোসনা আফরোজা বলেন, যারা শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে বিয়াম ফাউন্ডেশন ব্যবস্থা নেবে।