পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সিকেবি রুস্তমিয়া আলিম মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী ওসমান গনি মোল্লা (৫৮) দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছেন। সোমবার (৯ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে তাকে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর ভাঙ্গুড়া থানার পুলিশ বৃদ্ধমরিচ গ্রামের বাসিন্দা শাহাদত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ওসমান গনি মোল্লা দীর্ঘ দুই যুগ ধরে ওই মাদ্রাসায় নৈশপ্রহরীর দায়িত্বে ছিলেন। প্রতিদিনের মতো সোমবার সন্ধ্যায়ও তিনি দায়িত্ব পালন করতে মাদ্রাসায় যান। রাত আনুমানিক ১টার দিকে দুর্বৃত্তরা মাদ্রাসায় প্রবেশ করে তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, শাহাদত হোসেন বরিশালের এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ঘটনার রাতে ওই তরুণীকে নিয়ে সে গনি মোল্লার কাছে শরিয়া মতে বিয়ে পড়াতে আসে। তবে গনি মোল্লা তাতে রাজি না হওয়ায় শাহাদত ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগাল করে চলে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এর কিছুক্ষণ পরেই শাহাদত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ফিরে এসে ওসমান গনিকে কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়।
গনি মোল্লার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী শাহাদতের বাড়িতে হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। এতে প্রায় পাঁচ-ছয়টি ঘর পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব কোনও বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। আশা করছি দ্রুতই হত্যার প্রকৃত কারণ ও জড়িতদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে।’