X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কেন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না অবৈধ ক্লিনিক মালিকদের?

আরিফুল ইসলাম রিগান, কুড়িগ্রাম
০২ জুন ২০২২, ১০:০০আপডেট : ০২ জুন ২০২২, ১৫:২১

স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনার পর সারা দেশের মতো অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নড়েচড়ে বসেছে কুড়িগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে অভিযান পরিচালনা, অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে কেন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না অবৈধ ক্লিনিক মালিকদের এমন প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

কেন্দ্রীয় নির্দেশনা জারির পর মঙ্গলবার (৩১ মে) পর্যন্ত দুই দিন অভিযান পরিচালনা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। অভিযানে লাইসেন্স না থাকায় সাতটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে জেলায় মোট কতটি অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, সে তথ্য জানা নেই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের। একই সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হয়নি অবৈধ ক্লিনিক মালিকদের।

আরও পড়ুন: অবৈধ জেনেও বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ছিলেন অসহায়

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় ২৫টি ক্লিনিক এবং ৮২টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আবেদন করেছে কিন্তু লাইসেন্স পায়নি এমন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা প্রায় ২০টি (আনুমানিক)। তবে লাইসেন্সবিহীন কিংবা আবেদন না করেই কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কতটি, তার সঠিক তথ্য নেই স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে অনুমোদন প্রাপ্তির ব্যবস্থার কারণে নিবন্ধিত এসব প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত সংখ্যা তাদের কাছে নেই। তবে এবার কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পাওয়ায় তারা এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স যাচাই শুরু করেছেন। ফলে লাইসেন্সধারী, আবেদনকারী এবং লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এবার নির্ধারণ করবেন তারা। এতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।

উপজেলায় মোট নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা জানা নেই উল্লেখ করে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়েছি। তারা সেগুলো সরবরাহ করলে উপজেলার কতটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে সে তথ্য জানা যাবে।’

আরও পড়ুন: অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক: রুটিন কাজে নির্দেশনা লাগলো কেন?

এতদিন এসব তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘এতদিন জেলা থেকে এসব মনিটরিং করা হতো। এখন আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান মিয়া জানান, উপজেলায় কোনও ক্লিনিক না থাকলেও ঠিক কতটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে সে হিসাব তার কাছে নেই। এসব প্রতিষ্ঠান তার কার্যালয়ের আশপাশে থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় সবসময় পরিদর্শনে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘খুব সম্ভবত উপজেলায় আটটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। আমার জানামতে এসবের বেশিরভাগ লাইসেন্সবিহীন। আমরা অভিযানের নির্দেশনা পেয়েছি। খুব শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেবো।’

আরও পড়ুন: এক জেলায় ২৪০ ক্লিনিকের ২৩৩টি অবৈধ 

এর আগে অভিযান চালাতে বাধা ছিল কিনা জানতে চাইলে এ নিয়ে কোনও বক্তব্য দিতে রাজি হননি ডা. আসাদুজ্জামান মিয়া।

সার্বিক বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ-মুর্শেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মোট অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আমি বলতে পারবো না। লাইসেন্স পেয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আমার কাছে আছে। আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযানের মাধ্যমে লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করছি। ফলে কোন কোন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নেই, সে তথ্য বেরিয়ে আসছে।’

আরও পড়ুন: দিনাজপুরে অভিযানে ধীরগতি, অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের হিসাব নেই 

অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালালেও এতদিন কেন অভিযান পরিচালনা করা হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর ওপর স্বাস্থ্য বিভাগের নজরদারি নিয়ে গাফিলতির প্রমাণ মেলে।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘আসলে আমরা বলতে পারি না কতদিন ধরে এসব প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাচ্ছে। কারণ একটি প্রতিষ্ঠান বলছে, এক মাস থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছে। আরেকটি প্রতিষ্ঠান অভিযানের খবরে তালা লাগিয়ে চলে গেছে। ফলে তারা কতদিন ধরে চালাচ্ছে প্রকৃত তথ্য আমরা পাচ্ছি না। কাজেই এসব ক্লিনিক দীর্ঘদিন ধরে চলছে, এ ব্যাপারে একমত হতে পারছি না।’

অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মালিক ও পরিচালকদের আইনের আওতায় আনার বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘লাইসেন্স প্রাপ্তির আগে এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালানোর আইনগত সুযোগ নেই। এখন অভিযান নিয়মিত চলবে। সেই সঙ্গে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

/এএম/
সম্পর্কিত
তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৮ নির্দেশনা
ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে ১২ নির্দেশনা
উদ্বোধনের ১৩ মাসেও চালু হয়নি রংপুরের শিশু হাসপাতাল
সর্বশেষ খবর
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
ঘোড়াঘাটে মালবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত
ঘোড়াঘাটে মালবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত
নির্বাচনের সময় জাপায় কী হয়েছিল, জানাবেন জিএম কাদের
শনিবার জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভানির্বাচনের সময় জাপায় কী হয়েছিল, জানাবেন জিএম কাদের
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত