নবম শ্রেণিতে মোট শিক্ষার্থী ছিল ২৫ জন। করোনাভাইরাসের সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালে বাল্যবিয়েসহ নানা কারণে সেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে এসএসসিতে ফরম পূরণ করেছে মাত্র চার জন। এর মধ্যে দুজন ছাত্র বাকি দুজন ছাত্রী। এই দুই ছাত্রীরও বিয়ে হয় নবম শ্রেণিতে। বিদ্যালয়টি থেকে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এই চার শিক্ষার্থীর কেউই পাস করতে পারেনি। শতভাগ ফেল করা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি হলো কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের খামার বড়াইবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, এই বোর্ডের অধীন মোট পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ বছর শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খামার বড়াইবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক জানান, বাল্যবিয়ে এবং করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তার বিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় ফরমপূরণকারী চার শিক্ষার্থীর সবাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। সবাই মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তবে কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেনি। গত বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে সাত জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছিল। ২০০১ সালে এই বিদ্যালয়ের মোট ২৪ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ জন পাস করেছি যা এসএসসিতে প্রতিষ্ঠানটির সর্বোচ্চ ফলাফল। আর শতভাগ ফেল করার ঘটনা এবারই প্রথম।
প্রধান শিক্ষকের দেওয়া তথ্যমতে, বিদ্যালয়টি ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৯ সালে এমপিওভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিন বার নদী ভাঙনের শিকার প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩০।
প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে। চরের স্কুল হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার আগ্রহ কম। তারা অল্প বয়সেই কর্মমুখী হয়ে পড়ে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের বাল্যবিয়ে হয়ে যায়। ভবিষ্যতে যেন আর এমন ফলাফল না হয় সে বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার কুড়িগ্রাম জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ হাজার ২০৩ জন। এর মধ্যে ছেলে ১০ হাজার ৩০৯ জন এবং মেয়ে পরীক্ষার্থী আট হাজার ৮৯৪ জন। এদের মধ্যে পাস করেছে ১৪ হাজার ৪০৭ জন। পাসের হার ৭৫.০২ শতাংশ। যা দিনাজপুর বোর্ডের আওতাধীন জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম।