X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া মেধাবী নাজমুলের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
১৩ জুলাই ২০২৩, ১৭:১৬আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৩, ১৭:৩৪

জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও গুচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে ভর্তি ও ভবিষ্যৎ পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কুড়িগ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম। এই তিনটি ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপেক্ষমাণ তালিকায় আছেন এই শিক্ষার্থী।

তার বাড়ি জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামে। তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম ও মা‌য়ের নাম ফা‌হিমা বেগম। পেশায় দর্জির সহকারী বাবার বড় সন্তান নাজমুল অর্থাভাবে পড়া‌শোনার খরচের জোগান নি‌য়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। ফলে ভর্তি নি‌য়ে সিদ্ধান্তহীনতায় আছেন।

নাজমুল ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৪.৫ নি‌য়ে এসএসসি ও ২০২২ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে জিপিএ-৫ নি‌য়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

মেধাবী এই শিক্ষার্থী জানান, বাড়িতে থাকা গরু বিক্রি ও এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের টাকা দি‌য়ে তার ভর্তি প্রস্তুতি ও আবেদন খরচ নির্বাহ করা হ‌য়ে‌ছে। এখন তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সু‌যোগ মিললেও ভর্তি পরবর্তী খরচ মেটা‌নো নি‌য়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। তার বাবা স্বল্প আ‌য়ের কর্মজীবী হওয়ায় পড়া‌শোনার খরচ মেটা‌নো তার পক্ষে সম্ভব হবে না।

নাজমুল বলেন, ‘ভর্তির টাকা জোগাড় হ‌য়ে‌ছে। অনেকে ভর্তির খরচ দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু বাড়ির বাইরে থেকে পড়াশোনা করার যে ব্যয় তার কোনও সংস্থান করার সু‌যোগ আমার পরিবারের নেই। ফলে ভর্তি হলেও পড়া‌শোনা চালিয়ে যে‌তে পারবো কি না এ নি‌য়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছি। আমার জন্য কোনও শিক্ষাবৃ‌ত্তির ব্যবস্থা হলে ভালো হয়।’

‘আমা‌দের পাঁচ জনের সংসার। আমার বাবা দৈনিক আড়াইশ থেকে তিনশত টাকা রোজগার করেন। ছোট দুই ভাই‌ ও পরিবারের খরচ মিটিয়ে আমা‌কে দেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য তার নেই। তাই আমার এক‌টি বৃত্তির ব্যবস্থা হলে আমি নির্ভার হতাম। আমার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন পূরণ হ‌তো।’

মা ফা‌হিমা বেগম বলেন, ‘নাজমু‌লের বাবা এখন চো‌খে কম দেখেন। তেমন আয় কর‌তে পারেন না। আমরা গরিব মানুষ। ছেলের পড়াশোনার খরচ চালা‌নোর সামর্থ্য নেই। যে লোন কইরা খরচ দিছিলাম সেটার কিস্তি দি‌তেই হিমশিম খাচ্ছি। কেউ সাহায্য সহ‌যোগিতা করলে ভালো হ‌তো, ছেলেটা পড়া‌শোনা কর‌তে পারতো।’

বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার নিজের কোনও জমিজমা নেই। শ্বশুরবাড়ির জমিতে থাকি। একটি দর্জির দোকানে কাজ করি। সেখান থেকে যা পাই তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে। ছেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন কীভাবে পূরণ করবো?’

তিলাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, ‘নাজমুল ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া চালিয়ে আসছে। ওর বাবা একটি দর্জির দোকানে কাজ করেন। এতদিন অনেক কষ্টে ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছেন। কোনও প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা এগিয়ে এলে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।’

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নাজমু‌লকে সহ‌যোগিতার বিষ‌য়ে আমা‌র পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা থাকবে। তা‌র পড়া‌শোনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমি সামর্থ্যবান‌দের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’

জানা গেছে, নাজমুল জাহাঙ্গীরনগরে ৮০, চট্টগ্রামে ৪০৭ ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৬৬৬তম স্থান অধিকার করেছেন।

/এফআর/
সম্পর্কিত
জিএসটির ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, আটক ২ সহস্রাধিক
টাইমস হায়ার এডুকেশন র‌্যাংকিং: বাংলাদেশ থেকে শীর্ষে বুয়েট, বেসরকারিতে নর্থ সাউথ
সর্বশেষ খবর
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস