গাইবান্ধার সদর উপজেলার কলেজছাত্র সাদিক হোসেনের (১৯) মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে দুদিন পর আবার দাফন করা হয়েছে। সোমবার (৩ জুন) বিকালে নিজ বাড়ি উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের দক্ষিণ কুমরপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে, সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সাদিক হোসেনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ টহলে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। আদালতের নির্দেশে শনিবার (১ জুন) দুপুরে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে সাদিকের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
সাদিক হোসেন বল্লমঝাড় ইউনিয়নের দক্ষিণ কুমরপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে। তিনি তুলসীঘাট ছামছুল হক ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত ১৯ এপ্রিল বিকালে বেড়ানোর কথা বলে সাদিককে তার সুজকি মোটরসাইকেলসহ বাড়ি থেকে ডেকে নেয় পূর্বপরিচিত আকাশ (২০) নামে এক তরুণ। পরে সড়ক দুর্ঘটনায় সাদিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় আকাশের বাবা সাজু মিয়া। খবর পেয়ে সাদিকের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে এসে পরদিন দাফন করেন স্বজনেরা।
সাদিকের মরদেহ দাফনের পর তার স্বজনেরা অভিযোগ করেন, সাদিককে হত্যার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। আকাশ ও তার বাবা সাজু মিয়াসহ কয়েকজন মিলে সাদিককে হত্যা করে সড়ক দুর্ঘটনা বলে অপপ্রচার চালায়। এমনকি পুলিশ তাদের (অভিযুক্ত) দ্বারা প্রভাবিত হওয়ায় মামলা নিতে গড়িমসি করাসহ নানাভাবে অসহযোগিতা করে আসছেন। পরে আদালতের নির্দেশে সাদিকের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয়। এখন ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আর প্রকৃতভাবে তদন্ত করলে ঘটনার রহস্য উন্মোচন হবে।
তাদের দাবি, ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সাজু মিয়া ও তার ছেলে আকাশসহ আরও কয়েকজন। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজনেরা।
গত ১৯ এপ্রিল বিকালে সাদিক হোসেনের মৃত্যু হলেও ঘটনার ২১ দিন পর আদালতের আদেশে ১০ মে সাঘাটা থানায় মামলা হয়। নিহত সাদিকের ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে করা এই মামলায় আকাশ ও তার বাবা সাজু মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা তিন-চার জনকে আসামি করা হয়েছে। এরপর মামলা ও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ মে আদালত সাদিকের মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দেন। অভিযুক্ত সাজু মিয়া সদর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত জামাত আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: