আন্তনগর একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ঢাকা থেকে স্বামীর সঙ্গে আসছিলেন রিনা বেগম। পথে ট্রেনের মধ্যেই প্রসববেদনা উঠে তার। এ সময় ট্রেন যাত্রীদের সহায়তায় ট্রেনের মধ্যেই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি।
শুক্রবার (৯ মে) রাত পৌনে ৯টায় নবজাতক ও প্রসূতিকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এর আগে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী আন্তনগর একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে পার্বতীপুর-দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গার্মেন্টসে চাকরি করা ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানার বড়বাড়ি গ্রামের সেলিম হোসেন তার স্ত্রী রিনা বেগমকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে আন্তনগর একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্তান প্রসবের জন্য গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন তারা। সন্ধ্যায় পার্বতীপুর এলাকায় চলন্ত ট্রেনে প্রসববেদনা ওঠে প্রসূতি রিনা বেগমের। পরে ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীদের সহায়তায় চলন্ত ট্রেনে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। রাত ৮টায় ট্রেনটি দিনাজপুর স্টেশনে আসলে স্টেশন সুপার জিয়াউর রহমানের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নবজাতক ও প্রসূতিকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘প্রসূতি ট্রেনে সন্তান প্রসব করার ঘটনাটি জানার পর আমরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রেলওয়ে স্টেশনে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পৌঁছায়। পরে মা ও শিশুকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।’
দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন টিম লিডার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সন্ধ্যার পর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আমাদেরকে জানানো হলে আমরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাই। সেখানে ট্রেন থেকে প্রসূতি ও শিশুকে নিয়ে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।’
দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, ‘চলন্ত ট্রেনে জন্ম নেওয়া শিশুটি মায়ের গর্ভে ছিল ৭ মাস। পরিপূর্ণ সময়ের আগেই জন্ম নেওয়ায় শিশুটির চোখ ফোটেনি এবং তার কিছুটা ঠান্ডা লেগেছে। আমরা শিশুটিকে আলাদাভাবে চিকিৎসা প্রদান করছি। বর্তমান শিশুটি সুস্থ রয়েছে।’