সিলেট সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন নিহত ছাত্রলীগকর্মী আরিফ আহমদ (১৯)। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। রাজনীতিতে জড়ানোর পর পরই দেখা দেয় আরিফের প্রতিপক্ষ। তাকে ঘায়েল করার জন্য নিজ দলেরই নেতাকর্মীরা নেন পরিকল্পনা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ নভেম্বর শাহপরাণ থানাধীন উত্তর বালুচর এলাকায় রাতে তার উপর হামলা করে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। এ সময় তাকে বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়েও আঘাত করে হামলাকারীরা। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় হাসপাতালে। রবিবার (১৯ নভেম্বর) সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
ছেলের ওপর হামলার ঘটনায় আরিফের মা আঁখি বেগম ছয় জনের নামে মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানায় অভিযোগ দেন। থানায় করা অভিযোগে যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- বালুচর এলাকার জুনেদ, আনাছ মিয়া, কুদরত আলী, কালা মামুন, শরীফ, হেলাল ও সবুজ মিয়া।
অভিযোগে আরিফের মা উল্লেখ করেন, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে গত ১৫ নভেম্বর রাতে বালুচর এলাকার ২নং মসজিদের সামনে আমার ছেলে আরিফ আহমদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা মারধরের পাশাপাশি তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়েও আঘাত করে। আসামি আনাছ মিয়ার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আমার ছেলের একটি আঙুল কেটে পড়ে যায়। এ সময় আনাছ মিয়া, কুদরত আলী ও জুনেদ আমার ছেলেকে কুপিয়ে জখম করে। এ ছাড়া আসামি শরীফ আমার ছেলেকে ধরে রাখলে সবুজ ও হেলাল বেধড়ক মারধর করা শুরু করে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
রবিবার হাসপাতাল থেকে এসে সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় বাসার সামনে ওয়াকওয়েতে তার ওপর হামলা চালায় একদল যুবক। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে মারা যান।
জানা গেছে, আরিফ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম গ্রুপের অনুসারী। তিনি টিবি গেট এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে।
নিহতের মা আঁখি বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা প্রথমে মারধর করেছিল তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করায় ছেলেকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আমি ন্যায় বিচার পাইনি। ন্যায় বিচার যদি পেতাম তাহলে আমার ছেলেকে প্রাণ দিতে হতো না।
এ ব্যাপারে শাহপরাণ থানার ওসি আবুল খায়েরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।