X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে রূপ দিতে কাজ করছি: উপাচার্য

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৭ অক্টোবর ২০২২, ০৯:০০আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২২, ১২:৫৭

বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৭ বছর পূর্ণ করে ১৮ বছরে সম্প্রতি পদার্পণ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। একই সাথে ১৬৫ বছরে পা দিচ্ছে বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ২০ অক্টোবর ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। আজ ২৭ অক্টোবর শিক্ষক দিবস। এই দুই উপলক্ষকে ঘিরে বাংলা ট্রিবিউনের মুখোমুখি হয়েছেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক। কথা বলেছেন—বিশ্ববিদ্যালয়টির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, চলমান প্রকল্প,  ছাত্র সংসদ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সুবর্ণ আসসাইফ

বাংলা ট্রিবিউন: সামনের দিনগুলোতে বিশ্ব দরবারে জবিকে আরও শক্ত অবস্থানে নেওয়ার বিষয়ে কী ভাবছেন।

উপাচার্য: জগন্নাথকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য—সেভাবেই কাজ করছি। কারও সাথে তুলনা বা প্রতিযোগিতায় না গিয়ে স্বকীয়তার মাধ্যমেই বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দিতে কাজ করছি। এরজন্য একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।

বাংলা ট্রিবিউন: বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পরিবেশ উন্নত, শিক্ষার মান বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে আরও এগিয়ে নিতে কোনও পরিকল্পনা আছে কি?

উপাচার্য: আমরা ইতিমধ্যে গবেষণায় বাজেট বাড়িয়েছি। সামনে আরও বাজেট বাড়ানোর বিষয়ে ইউজিসির সাথে কথা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের গবেষণার সময় আরও বাড়াতে চাই আমরা,  ২-৩ মাস নয়—সারাবছরই যেন তারা গবেষণায় সময় দিতে পারে, ভালো মানের জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশ করতে পারেন, বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করছি। এছাড়াও দিবসভিত্তিক না বছরব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা আছে আমাদের, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় আয়োজন করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছি, সামনে শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় না সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করবো। আমাদের আবৃত্তি সংসদ ইতোমধ্যে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় উৎসবের আয়োজন করেছে, সামনে অন্যান্য সংগঠনের বিষয়েও জোড় দেওয়া হবে, যাতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে জগন্নাথ মুখ্য ভূমিকায় থাকতে পারে।

বাংলা ট্রিবিউন: ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের মাস্টার প্লানের কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুত প্রকল্প শেষ করা সম্ভব হবে কি?

উপাচার্য: মাস্টার প্ল্যান প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি। উনি চূড়ান্ত করলেই কাজ শুরু করবো। আমাদের ১২ একর জায়গা কম ছিল—সেটাও পেয়ে গেছি। দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। আশা করছি—সরকার আমাদের যে সময় দিয়েছেন তার আগেই কাজ শেষ করবো।

বাংলা ট্রিবিউন: শিক্ষার্থীদের দাবি রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জকসু) কার্যক্রম সচল ও দ্রুত নির্বাচনের। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব তৈরিতে জকসু নির্বাচন কতটা জরুরি বলে মনে করছেন?

উপাচার্য: জকসু আমাদের আইনের মধ্যে নেই। জকসুই যে একমাত্র নেতৃত্ব তৈরির পথ—এ নিয়ে আমি একমত নই। আমাদের অবকাশকেন্দ্রিক সংগঠনগুলো—আবৃত্তি সংসদ, ডিবেটিং সোসাইটি, বাঁধন, সাংবাদিক সংগঠনগুলোসহ সবজায়গায় নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে। সামনে আরও ভালো নেতৃত্ব তৈরি হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তো ছাত্র রাজনীতি নেই, সেখানেও তো নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে। জকসু করতে হলে আমাদের ফোরামগুলোতে কথা বলতে হবে। নেতৃত্ব যাতে গড়ে উঠতে পারে সেই প্রস্তুতি আমাদের আছে, শিক্ষার্থীদের সেই সুযোগ আমরা দিচ্ছি।

বাংলা ট্রিবিউন: জবির সবচেয়ে বড় সমস্যা আবাসন সংকট। ছাত্রী হল চালু হওয়ার পরও সিংহভাগ শিক্ষার্থী এখনও আবাসন সুবিধার বাইরে। নতুন ক্যাম্পাসে দ্রুত হল নির্মাণ বা আবাসন সংকট সমাধানে অন্য কোনও প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে কোনও চিন্তাভাবনা আছে কি?

উপাচার্য: আমাদের ছাত্রী হলে ৬০০ আসন,  সেখানে আমরা ১২০০ আসনের ব্যবস্থা করেছি। যেহেতু মেয়েরা মেসবাড়িতে থাকে—আমাদের এই ব্যবস্থার বিকল্প ছিল না। বছরখানিক হয়ে গেলেও কোনও বড় সমস্যা হয়নি, সবাই সুন্দর করে আছে, আসন দ্বিগুণ করার পরও। নতুন ক্যাম্পাসে আগে না হোক পাশাপাশি হলের কাজ করা হবে—যাতে শিক্ষার্থীরা দ্রুত হলে উঠতে পারেন। এখন প্রথম পর্যায়ের কাজ চলছে, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের সময় হল তৈরি করা হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: শিক্ষক হিসেবে জবির শিক্ষার্থীদের নিয়োগের পরিমাণ বাড়ানো বা শতভাগ নিয়োগ জবির শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে করার বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?

উপাচার্য: বিশ্ববিদ্যালয় হলো বিশ্বব্যাপী চিন্তার জায়গা। তাই আমাদের মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষক দরকার। আমাদের শিক্ষার্থীরা যোগ্য হলে অবশ্যই নিয়োগ দিবো, কোনও কোটায় বা দয়ায় নিয়োগ দেওয়া হবে না। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর যে নিয়োগ হয়েছে সেখানেও আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়োগ হয়েছে, সব বিভাগেই আমাদের শিক্ষার্থীদের নেওয়া হয়েছে, এদের কিন্তু করুণা বা অনুকম্পার মাধ্যমে নেওয়া হয়নি। তারা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতা করেই নিজেদের প্রমাণ করে নিয়োগ পেয়েছেন। সামনে আরও বাড়বে আমাদের যোগ্য শিক্ষার্থীদের সংখ্যা—আমি আশাবাদী। শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা দেখাতে পারলে, প্রয়োজন হলে শতভাগ শিক্ষকই জগন্নাথ থেকে নেওয়া হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: বর্তমান সময়ে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে কীভাবে দেখেন, সর্বোপরি শিক্ষক দিবস নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী।

উপাচার্য: শিক্ষক-ছাত্র একটি পরিবার। শিক্ষকের দায়িত্ব শিক্ষার্থীর মধ্যে  মানবিক গুণাবলি তৈরি করে দেওয়া, শিক্ষার্থী যেন তার লব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে নিজের জীবনের পাশাপাশি জাতীয় জীবনেও ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা শিক্ষকরাও চেষ্টা করি ছাত্র যেনও প্রকৃত শিক্ষাটা লাভ করে। শিক্ষার্থীদেরও একাডেমিক শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনে মনোযোগী হতে হবে, অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না, ভবিষ্যৎ জীবনে তাকে জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে—এটা মাথায় রাখতে হবে। সেজন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক থাকতে হবে। শিক্ষককেও শিক্ষার্থীকে সন্তান হিসেবে দেখতে হবে, সেভাবেই তাকে গড়ে তুলতে হবে যাতে ভবিষ্যতে সে যে ক্ষেত্রেই কাজ করুক—সে যেনো লব্ধ জ্ঞানকে পূর্ণরূপে ব্যবহার করে দেশকে এগিয়ে নিতে পারে।

/এমএস/
সম্পর্কিত
যৌন হয়রানির অভিযোগে জবির আরেক শিক্ষক বরখাস্ত
অবন্তিকার আত্মহত্যা: আম্মানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর
নিপীড়ক শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি ভুক্তভোগীর
সর্বশেষ খবর
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
লাগাতার তাপদাহে যশোরে জনজীবন দুর্ভোগে
লাগাতার তাপদাহে যশোরে জনজীবন দুর্ভোগে
জেলেনস্কিকে হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত অভিযোগে পোলিশ নাগরিক গ্রেফতার
জেলেনস্কিকে হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত অভিযোগে পোলিশ নাগরিক গ্রেফতার
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ