X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফের অস্থিতিশীল ‘শিল্পী সমিতি’, অভিযোগের তীর নিপুণের দিকে!

কামরুল ইসলাম
০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৫:০০আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:২২

আলোচনার সড়ক থেকে মাস চারেক কিছুটা বাইপাসে চলছিলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। না, সে পথ খুব একটা দীর্ঘ হয়নি। চর্চাহীন জার্নি যেন সংগঠনটির সঙ্গে খাপ খায় না। তাই ফের আলোচনার টেবিলে সমিতির নাম। আর এবার দুই শিল্পীর সাংগঠনিক পদ বাতিল এবং একজনের সদস্যপদ স্থগিত ইস্যুতে অভিযোগের তীর তাক হয়েছে আপাতত ‘সাধারণ সম্পাদক’ নিপুণ আক্তারের দিকে।

বিষয়টা খোলাসা করা যাক। সংগঠনটির গেলো নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে চিত্রনায়ক রুবেল এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য পদে জয়লাভ করেন অভিনেত্রী সুচরিতা। গঠনতন্ত্র মোতাবেক তারা শপথও নিয়েছিলেন। তবে নিয়ম অনুযায়ী পরপর তিনটি সভায় উপস্থিত হননি। এই কারণ দেখিয়ে তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। ব্যাখ্যার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গঠনতন্ত্রের ৭(খ) ধারা অনুযায়ী কার্যকরী কমিটি থেকে তাদের পদ বাতিল করা হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি নিপুণ আক্তার সাক্ষরিত এক নোটিশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
 
অন্যদিকে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তিনি নিপুণ আক্তারকে নিয়ে ‘মানহানিকর বক্তব্য’ দিয়েছেন। যার ফলে শিল্পী ও সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এ কারণে গঠনতন্ত্রের ৭(ক) ধারা মোতাবেক তার সদস্যপদ স্থগিতের কথা ভাবছে সংগঠনটি। রবিবার (২ এপ্রিল) এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে।
   
বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার জন্য নিপুণ আক্তারকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তার সাড়া মেলেনি। তবে সুচরিতা ও রুবেলের লিখিত জবাবের কপি পাওয়া গেছে। এছাড়া জায়েদ খানও তার বক্তব্য পরিষ্কার করেছেন বাংলা ট্রিবিউনের কাছে। 

ফের অস্থিতিশীল ‘শিল্পী সমিতি’, অভিযোগের তীর নিপুণের দিকে! শিল্পী সমিতি বরাবর পাঠানো সুচরিতা ও রুবেলের জবাবের কথা একই, কেবল নাম ভিন্ন। তারা বলেছেন, ‘‘সভায় অনুপস্থিতির বহু কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সমিতির গঠনতন্ত্রের ৯(ঘ) ধারা অনুযায়ী ‘সাধারণ সম্পাদক’ পদটি কার্যনির্বাহী পরিষদের ‘প্রধান নির্বাহী’ এবং এই ধরনের দাফতরিক চিঠিপত্র তারই সাক্ষরে প্রেরণ হওয়ার কথা। কোনও যৌক্তিক/বৈধ কারণে তিনি অনুপস্থিত থাকলে তার স্থলে গঠনতন্ত্রের ৯(ঙ) ধারা মোতাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক তা সম্পাদন করবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও এক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে আমার কাছে পত্রটি প্রেরিত হয়নি। তার চেয়েও বড় সত্য এই যে, প্রধান নির্বাহীর উক্ত পদের (সাধারণ সম্পাদক) বৈধতা নিয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে একটি মামলা এখনও বিচারাধীন বা অমীমাংসিত। এমতাবস্থায় সমিতির প্রধান নির্বাহী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ও কর্মকাণ্ডকে পাশ কাটিয়ে যে কোনও সভা-সমাবেশ বা নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কার্যক্রম অগঠনতান্ত্রিক এবং একইসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালত অবমাননার সামিল।’’

সুচরিতা-রুবেলের বক্তব্যে স্পষ্ট, সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে এখনও আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় না আসায় তারা ঐ ব্যক্তির নেতৃত্বে সংগঠনের কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। 

অন্যদিকে জায়েদ খানের বক্তব্য এরকম, ‘তিনি (নিপুণ) যা ইচ্ছা, তা করছেন, এটা ভাবতে পারেন! এখন তাদের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত আসুক, তারপর আমি আমার পদক্ষেপ সম্পর্কে জানাবো। আমাকে যে চিঠি দিয়েছে, সেটার কোনও আগা-মাথা আছে? লিখেছে, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হয়ে বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের নামে মানহানিকর মন্তব্য করেছি। কিন্তু এতে সদস্যপদ বাতিল হবে কেন? গঠনতন্ত্রের ৭(ক) ধারার কথা বলেছে, সেখানে তো লেখা আছে সংগঠনের পরিপন্থী কোনও কর্মকাণ্ড করলে সদস্যপদ বাতিল হবে। আমি তো সংগঠনের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলিনি। যিনি নিজেকে সমিতির প্যাডে ও কার্যক্রমে সাধারণ সম্পাদক দাবি করছেন, তিনি তো আইনের বিচারে তা নন। বিচারটি এখনও চলমান।’

জায়েদ খানের দাবি, তার ঠিকানায় যখন চিঠি পাঠানো হয়েছে, তিনি তখন দেশেই ছিলেন না। তার ভাষ্য, ‘আমি ১৯ ফেব্রুয়ারি মুম্বাইতে গিয়েছিলাম, ২২ তারিখে আমাকে চিঠি দিয়েছে। বাসায় কেউ ছিলো না। দারোয়ানের কাছে ফেলে চলে গেছে। অনেক দিন পর দারোয়ান আমাকে চিঠিটা দেয়। আগে পেলে তো আমি আরও আগেই এটা সবাইকে জানাতাম। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, যে পদটা নিয়ে এখনও আদালতের সিদ্ধান্ত আসেনি, চূড়ান্ত শুনানির অপেক্ষায় আছে, সেই পদে কীভাবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন? গায়ের জোর দিয়ে এসব করছেন।’

রবিবার (২ এপ্রিল) শিল্পী সমিতি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানানোর পরই ফের আইনের পথে হাঁটবেন বলে জানান জায়েদ খান।

সমিতির প্রতি সুচরিতা ও রুবেলের জবাব, ওপরে সমিতির সংবিধানের অংশ বলা জরুরি, ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এতে সভাপতি পদে জয়লাভ করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তবে বিপত্তি বাঁধে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ফলাফলে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এরপর নিপুণ আক্তারের অভিযোগে নির্বাচনের আপিল কমিটি জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করেন এবং বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিপুণকে বিজয়ী করেন। এতে নাটকীয়তার শেষ তো না, বরং শুরু হয়। কারণ বিষয়টি এরপর সংবাদ সম্মেলন, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ-মন্তব্যের মিছিল পেরিয়ে আদালতে পৌঁছায়। হাই কোর্ট প্রথমে জায়েদ খানের পক্ষে রায় দেন। সেই রায়ের বিপক্ষে আবার আপিল করেন নিপুণ। ওই আপিলের চূড়ান্ত রায় এখনও আসেনি।

/এমএম/
সম্পর্কিত
টাইমস স্কয়ারের পর্দায় আবারও বাংলা গান
টাইমস স্কয়ারের পর্দায় আবারও বাংলা গান
১১ ছবিতে ঈদ: হল সংখ্যায় শাকিবের দাপট, অন্যরা যা পেলো
এ সপ্তাহের ছবি১১ ছবিতে ঈদ: হল সংখ্যায় শাকিবের দাপট, অন্যরা যা পেলো
অবশেষে নিপুণের সঙ্গী মাহমুদ কলি
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনঅবশেষে নিপুণের সঙ্গী মাহমুদ কলি
কাঞ্চন নেই, ফেরালেন শাকিব-অনন্ত, অথৈ সাগরে নিপুণ!
কাঞ্চন নেই, ফেরালেন শাকিব-অনন্ত, অথৈ সাগরে নিপুণ!
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
১৬ বছর পর জেনস সুমনের ফেরা (ভিডিও)
১৬ বছর পর জেনস সুমনের ফেরা (ভিডিও)
মা হারালেন বেবী নাজনীন
মা হারালেন বেবী নাজনীন
ওমর: ‘নায়িকাবিহীন’ এক থ্রিলার
সিনেমা সমালোচনাওমর: ‘নায়িকাবিহীন’ এক থ্রিলার