X
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫
২৪ বৈশাখ ১৪৩২

জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে সিঙ্গাপুরে ৪ বাংলাদেশির কারাদণ্ড

বিদেশ ডেস্ক
১২ জুলাই ২০১৬, ১১:৩৪আপডেট : ১২ জুলাই ২০১৬, ১২:৩১
image

মিজানুর রহমান, রুবেল মিয়া, জাবেদ কায়সার ও ইসমাইল হাওলাদার

দেশে জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগে চার বাংলাদেশিকে দুই থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সিঙ্গাপুরের একটি আদালত। মঙ্গলবার দেশটির একটি আদালত ওই চারজনের সাজা ঘোষণা করে বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইটস টাইমস।

কারাদণ্ড প্রাপ্ত চার বাংলাদেশি হলেন, মিজানুর রহমান (৩১), রুবেল মিয়া (২৬), মো. জাবেদ কায়সার হাজি নুরুল ইসলাম সওদাগর (৩০) ও ইসমাইল হাওলাদার সোহেল (২৯)। এ চারজনই চলতি বছরের ৩১ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আদালতের রায়ে চক্রটির প্রধান মিজানুর রহমানকে ৫ বছরের (৬০ মাস) কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ইসমাইল হাওলাদার সোহেলকে ২ বছরের (২৪ মাস) কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। রুবেল মিয়া ও জাবেদ কায়সারকে আড়াই বছর (৩০ মাস) করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায়ে বলা হয়েছে, গত ২৭ মে থেকে তাদের সাজা কার্যকর হবে। ওই দিনই অভিযুক্তরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। একই অভিযোগে অভিযুক্ত মামুন লিয়াকত আলী (২৯) ও জামান দৌলত (৩৪) নামের অপর দুই বাংলাদেশি জঙ্গি অর্থায়নে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সাজাপ্রাপ্তদের জঙ্গি অর্থায়নবিষয়ক আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ আইনে দেশটিতে এই প্রথম সাজা প্রদান করা হলো।

আদালতের নথি অনুসারে, জঙ্গি অর্থায়নকারীদের এ গ্রুপের প্রত্যেকের দায়িত্ব ভাগ করা ছিল। মিজানুর রহমান ছিলেন তাদের দলনেতা। মামুন ছিলেন তার সহকারী। রুবেল মিয়া ছিলেন ওই দলের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে এবং জাবেদ কায়সার সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বে ছিলেন। জামান ও সোহেলকে গ্রুপের নিরাপত্তা ও নতুনকর্মী সংগ্রহের দায়িত্বও দেওয়া হয়।

আদালতের নথিতে আরও দেখা যায়, জাবেদের কাছে ১ হাজার ৩৬০ ডলার জমানো ছিল। এর মধ্যে রুবেল তাকে ১ হাজার ৬০ ডলার দিয়েছিল। ওই ছয়জন ৬০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত  প্রদান করেছিলেন।

আদালতের নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মিজানুর রহমান ২০১৫ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশে অপর এক বাংলাদেশি নাগরিক ‘জাহাঙ্গীর আলম’-এর সঙ্গে সাক্ষাতের পর জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরে আসার সময় মিজানুরের সঙ্গী ছিলেন জামান এবং অপর এক বাংলাদেশি নাগরিক সোহাগ ইব্রাহিম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি ওই দুই ব্যক্তিকে আইএস-এ যোগ দিতে রাজী করান।

ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর অন্যদের দলে নেওয়া হয়। রহমান ‘সশস্ত্র জিহাদ’-এর কথা উল্লেখ করে অন্যদের বলেন, তারা বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে ‘অবিশ্বাসীদের’ হত্যা করবেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর এপ্রিলে সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনের আওতায় ৮ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ওই সময় স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, আটক হওয়া ওই আট বাংলাদেশি দাবি করেছেন তারা ইসলামিক স্টেট ইন বাংলাদেশ (আইএসবি) এর সদস্য। গত মার্চে সিঙ্গাপুরে তারা সংগঠনটি গড়ে তোলেন। সিরিয়া ও ইরাকে তৎপর থাকা সশস্ত্র সংগঠন আইএস-এর হয়ে লড়াই ও যোগদানের পরিকল্পনা করেছিলেন ওই বাংলাদেশিরা। তবে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমানোটা কঠিন হয়ে পড়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তারা মত পাল্টান। গড়ে তোলেন নতুন পরিকল্পনা। ওই আট বাংলাদেশি দেশে ফিরে সহিংস কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সরকার উৎখাত, একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং তা ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস ঘোষিত খেলাফতের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেন। সূত্র: স্ট্রেইটস টাইমস।  

/এসএ/এএ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি ‘স্পষ্ট ও বাস্তব’, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি ‘স্পষ্ট ও বাস্তব’, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
মহানির্বাণ
মহানির্বাণ
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে কাঁপছে দক্ষিণ এশিয়া, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শঙ্কার মেঘ
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে কাঁপছে দক্ষিণ এশিয়া, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শঙ্কার মেঘ
কক্সবাজার পৌর এলাকা থেকে দৈনিক ৩৪ টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে পড়ছে
কক্সবাজার পৌর এলাকা থেকে দৈনিক ৩৪ টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে পড়ছে
সর্বাধিক পঠিত
‘তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়েও তাকে বাঁচানো যায়নি’
‘তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়েও তাকে বাঁচানো যায়নি’
ফিরে গেছে কুয়েত ও তার্কিশ এয়ারের ঢাকাগামী ২ ফ্লাইট
পাকিস্তানে ভারতের হামলাফিরে গেছে কুয়েত ও তার্কিশ এয়ারের ঢাকাগামী ২ ফ্লাইট
সার্বভৌমত্ব রক্ষার ডাক আসিফ-হাসনাতের
সার্বভৌমত্ব রক্ষার ডাক আসিফ-হাসনাতের
‘সকালে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় এএসপি পলাশের, দুপুরে অফিসে নিজ মাথায় গুলি’
‘সকালে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় এএসপি পলাশের, দুপুরে অফিসে নিজ মাথায় গুলি’
সিঁদুর অভিযান: ভূপাতিত ভারতীয় বিমানের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা
সিঁদুর অভিযান: ভূপাতিত ভারতীয় বিমানের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা