জম্মু ও কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ দাবি করে ভারতের সেনাবাহিনী। বুধবার জঙ্গিদের লক্ষ্য করে জম্মু-কাশ্মির সীমান্তে পরিচালিত ওই ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ নামের ওই অভিযান নিয়ে এরপর থেকেই আগ্রহ তৈরী হয় জনমানসে। বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য ‘সার্জিক্যাল অ্যাটাক’ নামের অভিযানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির একটি প্রতিবেদনকে ভিত্তি হিসেবে নিয়ে এই প্রতিবেদনটি তৈরী করা হয়েছে।
টাইমস নাউ নিজস্ব সূত্রের বরাতে তাদের প্রতিবেদনে দাবি করে, নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে পরিচালিত হামলায় ৯ সেনা সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। আর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন বলছে, হামলা চালানো হয়েছে অন্তত ৭টি জঙ্গি ঘাঁটিতে। বুধবার দিনগত রাত আড়াইটা থেকে ৮টা পর্যন্ত সারজিক্যাল স্ট্রাইক নামের ওই অভিযান পরিচালিত হয়।
সেনাবাহিনীর ভাষায় সারজিক্যাল স্ট্রাইক বলতে বোঝায় এমন কোন ইচ্ছাকৃত হামলা যাতে পার্শ্ববর্তী কোন অঞ্চলকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করা হয়। সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান ফালি হোমি বলেন, ‘সারজিক্যাল স্ট্রাইক হচ্ছে একটি পরিকল্পিত রণকৌশল যাতে লক্ষ্যবস্তুকে সর্বোচ্চ আঘাত করা সম্ভব হয় ও পুরো অভিযান নির্বিঘ্নে শেষ হয়।’
এদিকে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল শঙ্কর প্রসাদ এনডিটিভিকে বলেন, সারজিক্যাল স্ট্রাইক যথেষ্ট জটিল অভিযান যা চালাতে যথেষ্ট সবল থাকতে হয়। তিনি বলেন, ‘এই অভিযান জটিল কেননা লক্ষ্যবস্তু সর্বদাই গতিশীল। ফলে নিজের কোন ক্ষতি হতে না দিয়ে আঘাত করে ফিরে আসা খুব কঠিন। এই অভিযানে প্রত্যেক সেনাকে পর্যন্ত নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া থাকে। দলের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকে।’
উল্লেখ্য, জম্মু-কাশ্মিরের সীমান্ত অঞ্চলে (লাইন অব কন্ট্রোল) ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে নাকি ভারত পাকিস্তান সীমান্তের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে দিল্লি ও ইসলামাবাদ। ভারত বলছে, নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে দেশটির সেনাবাহিনী পাকিস্তানি জঙ্গি আস্তানাগুলোতে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান বলছে, ভারত মিথ্যে কথা বলে নিজেদের প্রতিপত্তির জানান দিতে চাইছে; তারা নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরোয়নি, বরং এটি সীমান্ত সংঘর্ষ। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিয়ে এমন সামরিক অভিযানকে বোঝানো হয়, যে অভিযানে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর বাইরে আশপাশের অবকাঠামো কিংবা জনসাধারণ হামলার শিকার হয় না বলে দাবি করা হয়। আর সীমান্ত সংঘর্ষ হলো আন্তঃসীমান্ত গোলাগুলির ঘটনা।
/ইউআর/বিএ/