মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের চলমান পরিস্থিতির সমাধানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক ডাকার অনুরোধ করেছে সুইডেন ও ব্রিটেন। সোমবার দেশ দুটি এ অনুরোধ জানায় বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৫ আগস্ট থেকে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা চলছে। সহিংসতা থেকে বাঁচতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। শরণার্থী শিবিরে তৈরি হয়েছে মানবিক পরিস্থিতি।
এই সংকট কাটাতেই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে ওই দুই দেশ। কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, বুধবার রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে পারে।
২৫ আগস্ট ভোররাতে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের সঙ্গে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সংঘর্ষ হয়। এরপর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোকে লক্ষ্য করে সেনা অভিযান শুরু হয়। গুলি করা হয় রোহিঙ্গাদের উপর, জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তাদের ঘরবাড়ি। জাতিসংঘ জানায়, এ অভিযানে এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন সোয়া তিন লাখ শরণার্থী।
এই পরিস্থিতিকে জাতিগত নিধনের আদর্শ উদাহরণ আখ্যা দেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচআরসি) প্রধান জায়েদ রাদ আল হুসেইন। সোমবার এই ‘ভয়ানক সামরিক অভিযান’ বন্ধ করারআহ্বান জানান তিনি।
এদিকে সোমবার রাখাইনের পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক ডাকার অনুরোধ করে সুইডেন ও ব্রিটেন। এর আগে গত ৩০ আগস্ট নিরাপত্তা পরিষদের একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রাখাইনের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এরপর চলতি মাসের শুরুর দিকে নিরাপত্তা পরিষদকে উদ্দেশ্য করে এক বিরল চিঠি লেখেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস। চিঠিতে তিনি রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতি মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।