X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সন্তানদের বন্দি রাখার অভিযোগ অস্বীকার করলেন ক্যালিফোর্নিয়ার সেই দম্পতি

বিদেশ ডেস্ক
১৯ জানুয়ারি ২০১৮, ১১:১৮আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০১৮, ১১:২২
image

১৩ সন্তানকে বাড়িতে অমানবিকভাবে আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ডেভিড টুরপিন ও লুইস টুরপিন দম্পতি। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) আদালতে হাজির করা হলে তারা নিজেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ড্রিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি সংবাদ সম্মেলন করছেন, পাশে ছবিতে টুরপিন দম্পতি
১৪ জানুয়ারি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি বাড়িতে বন্দিদশায় থাকা ১৩ ভাই-বোনকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের কাউকে কাউকে শেকল দিয়ে খাটের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিল। সন্তানদের আটকে রাখার অভিযোগে তাদের বাবা-মা ডেভিড অ্যালেস টুরপিন এবং লুইস আন্না টুরপিনকে আটক করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও শিশুদের বিপন্নতায় ফেলার বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়। ১৪ জানুয়ারি সকালে আটক ছেলেমেয়েদের মধ্য থেকে সতেরো বছর বয়সী একটি মেয়ে পালিয়ে জরুরি সহায়তা বিভাগে অভিযোগ করার পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। ওই মেয়েটিই পুলিশকে জানায়,তার আরও ১২ ভাই-বোনকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। এরপর পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালায় এবং আটককৃতদের উদ্ধার করে।

বিবিসি জানায়, প্রসিকিউটররা আদালতে ভয়াবহ অভিযোগগুলোর বিস্তারিত উপস্থাপনের কয়েক ঘণ্টা পর ডেভিড টুরপিন ও লুইস টুরপিনকে আদালতে হাজির করা হয়। রিভারসাইড কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি মাইক হেস্ট্রিন বলেন, ওই দম্পতি তাদের সন্তানদেরকে বেঁধে রেখে সাজা দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রথমে তারা সন্তানদের দড়ি দিয়ে এবং পরে শেকল দিয়ে খাটের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। তিনি জানান, কয়েক সপ্তাহ কিংবা কয়েক মাস ধরে চলতো। সময় গড়ানোর সাথে সাথে অনেক সময় সাজার তীব্রতাও বেড়ে যেতো বলে অভিযোগ করেছেন সন্তানেরা। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া আলামতের ভিত্তিতে প্রসিকিউটরদের দাবি, আটক রাখা সন্তানদেরকে টয়লেটে যাওয়ার সময়ও শেকলমুক্ত করা হতো না। বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়া সন্দতানদের একজন অভিযোগ করেছে,  বাবা-মা তাদেরকে প্রায়ই পেটাতো, বছরে একবার গোসল করতে দিতো, তাদেরকে সারারাত জোগিয়ে রাখতো এবং দিনে ঘুমাতে দিতো। সন্তানদের অভিযোগ, তাদেরকে খেলনা দিয়ে খেলতে দেওয়া হতো না, যদি তারা হাত ধোয়ার সময় কবজির উপরে পানি উটতো তাহলে তাদেরকে পানি দিয়ে খেলার জন্য বকাঝকা করা হতো। চার বছর ধরে তাদেরকে কোনও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়নি।  

দোষী সাব্যস্ত হলে টুরপিন দম্পতিকে ৯৪ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর হেস্ট্রিন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, টুরপিন দম্পতি অনেক বছর ধরে টেক্সাসে ছিলেন। ২০১০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় যান তারা। টুরপিনকে দুইবার দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয়বার তাকে দেউলিয়া ঘোষণা করার সময় জানা যায় টুরপিন বিমান ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি নরথ্রপ গ্রুম্মানে তুলনামূলকভাবে ভালো বেতনে কাজ করেন। তার স্ত্রী কোনও চাকরি করতেন না। এতো সন্তানের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতেন তিনি। তার ব্যয় আয়ের পরিমাণকে ছাপিয়ে যেতো। ক্যালিফোর্নিয়ার শিক্ষা দফতরের ওয়েবসাইটে টুরপিনকে স্যান্ডক্যাসেল দিবা স্কুলের প্রিন্সিপাল হিসেবে উল্লেখ করা আছে। বেসরকারি এই স্কুলটি টুরপিনের বাড়ির কাছেই। ২০১১ সালের মার্চে স্কুলটি যাত্রা শুরু করেছিল।

টুরপিনের মা-বাবা জানান,তাদের নাতি নাতনিদেরকে বাড়িতেই শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। তবে চার-পাঁচ বছর ধরে ডেভিড ও লুইস টুরপিনের সঙ্গে দেখা হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা। টুরপিন দম্পতি এবং তাদের সন্তানদের আচরণ স্বাভাবিক ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরাও। তাদেরকে খুব একটা বাইরে দেখা যেত না।

/এফইউ/
সম্পর্কিত
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দেওয়া ব্যক্তির মৃত্যু
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দিলেন এক ব্যক্তি
সর্বশেষ খবর
তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলো ইউক্রেন
তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলো ইউক্রেন
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
‘ধর্ষণে’ অসুস্থ স্কুলছাত্রীকে স্বামী পরিচয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে যুবকের পলায়ন
‘ধর্ষণে’ অসুস্থ স্কুলছাত্রীকে স্বামী পরিচয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে যুবকের পলায়ন
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে