বিশ্বের অনেক দেশে খাদ্যের ঘাটতি রয়েছে। ফসল উৎপাদনের জন্য বিশ্বজুড়ে সারের যেই ঘাটতি দেখা দিয়েছে তাতে খাদ্যের দাম অনেকাংশে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে দরিদ্র দেশগুলোকে চরম সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কারণ সার উৎপাদনের জন্য প্রচুর পরিমাণে গ্যাসের প্রয়োজন হয়।
এ বিষয়ে বিবিসি টুডের প্রোগ্রামের সঙ্গে কথা হয় স্ভেইন তোরে হোলসেথারের, যিনি নরওয়ের বৃহৎ রাসায়নিক কারখানা ইয়ারা ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী পদে কর্মরত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্যাসের উচ্চমূল্যের কারণে তার কোম্পানি বাধ্য হয়ে কিছু উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। তাতে খাদ্যের দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
এই প্রধান নির্বাহী মনে করেন, ঘাটতির ফলে উন্নয়শীল দেশগুলো সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে। কারণ, ফলন কমে যাওয়া মানে খাদ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ‘এটি সত্যিই ভীতিকর যে আমরা খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হচ্ছি। এতে দরিদ্র লোকেরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে’।
বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, খাদ্য উৎপাদন কমে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে খাদ্যের দামে বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক লোকের মানিব্যাগের উপর প্রভাব পড়ছে। এটি শুধু মানিব্যাগ নয়, জীবন মৃত্যুর প্রশ্ন’।
কৃষকরা ভুট্টা, ক্যানোলো এবং গমের মতো ফসল উৎপাদনের জন্য সারের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ধীরে ধীরে উৎপাদন কমা মানে কৃষকরা চাহিদা মতো জমিতে ফসল রোপণ করতে পারবেন না। একপর্যায়ে ফসল পুষ্টির অভাবে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলনও পাবে না কৃষকরা।
এই সংকট দেখা দিয়েছে মূলত গত কয়েক মাসে ধাপে বিশ্বজুড়ে গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায়। এর বড় কারণও রয়েছে যেমন, মহামারী করোনার ধাক্কা।
ইয়ারা ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বের যেকোনও কোম্পানির চেয়ে বেশি উৎপাদন করে থাকে। গত বছরের তুলনায় ২৫৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কিন্তু পরিস্থিতি এখন খুবই অস্থির। বড় পর্যায়ের দুর্ভিক্ষ এড়াতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-ডব্লিউএফপি'র সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন তোরে হোলসেথার।
সহায়তার প্রসঙ্গ টানার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গত বছর পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতে ৪০ হাজার টন সার দান করেছিল সার উৎপাদনকারী কোম্পানি ইয়ারা ইন্টারন্যাশনাল। পরবর্তীতে দেখা গেছে, এই সহায়তার ফলে ছোট ছোট খামারিরা বেশ উপকৃত হয়।