ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ও মধ্যপন্থি অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ফ্রাসোয়া বাইরুকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। গত সপ্তাহে অনাস্থা ভোটে ডানপন্থি মিশেল বার্নিয়ের হেরে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী পদে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) স্থলাভিষিক্ত হন বাইরু। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর বাইরু বলেছেন, দেশে ঋণ সমস্যার গুরুতর অবস্থা তিনি উপলব্ধি করতে পারছেন। এখন প্রয়োজন বাজেট পাসের জন্য পার্লামেন্টের ঐকমত্য। তিনি এই চ্যালেঞ্জকে হিমালয় জয় করার মতো কঠিন বলে অভিহিত করেন। দেশের চলমান সংকটে রাজনীতিবিদরা জনগণের আস্থা হারিয়েছেন। দুপক্ষের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া ‘কাঁচের দেয়াল’ ভাঙার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি, দেশকে একতাবদ্ধ করে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৭৩ বছর বয়সী প্রভাবশালী এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মধ্যপন্থি মোডেম পার্টির নেতা। নিজেকে তিনি ‘গ্রামাঞ্চলের মানুষ’ বলে পরিচয় দেন। তিনি দেশটির সাবেক শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়া পাউ শহরের মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকেই ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও পরামর্শদাতা হিসেবে আছেন বাইরু।
চলতি বছর ফ্রান্সে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী বদল হলো। বার্নিয়ের সরকার মাত্র তিন মাস টিকেছিল। নতুন সরকারও একই পরিণতির শিকার হোক, সেটা চাচ্ছেন না প্রেসিডেন্ট।
গত জুনে আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। সে সময় ফ্রান্সের পার্লামেন্ট তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বামপন্থি জোট সর্বাধিক ভোট পেলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়।
অন্যদিকে ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থি জোট কিছু আসন হারালেও নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়। কট্টর ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি আসন সংখ্যা বাড়ালেও বাম ও মধ্যপন্থিদের কৌশলগত ভোটের কারণে ক্ষমতায় যেতে পারেনি।
পার্লামেন্টে এই বিভক্তি এখনও বিদ্যমান। তাই, নতুন প্রধানমন্ত্রীর প্রাথমিক কাজ হবে পার্লামেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করে ২০২৫ সালের পূর্ণ বাজেট পাস করতে সক্ষম হবে এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করা।