টিকটকে মেয়ের শেয়ার করা ভিডিও নিয়ে আপত্তি ছিল বাবার। তার জেরে নিজের কিশোরী মেয়ে হীরাকে হত্যা করেন আনোয়ার উল হক নামের পাকিস্তানি ব্যক্তি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় কোয়েটা শহরে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) হীরাকে হত্যা করা হয়। প্রাথমিকভাবে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তার মেয়েকে হত্যা করেছে বলে বাঁচার চেষ্টা করেন আনোয়ার। পরে তদন্তকারীদের জেরার মুখে অপরাধের কথা স্বীকার করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পরিবারটির প্রায় ২৫ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাস করেছে। সম্প্রতি তারা পাকিস্তানে ফিরে আসে। অর্ধশতাব্দী মার্কিন মুলুকে কাটানো পরিবারটির ১৩/১৪ বছর বয়সী কিশোরী হীরার জামা-কাপড়, চলাফেরা নিয়ে যথেষ্ট অভিযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন এক তদন্ত কর্মকর্তা।
পুলিশ জানিয়েছে, হীরার হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য সব দিক পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। নিহত কিশোরী পাকিস্তানের সাধারণ চর্চায় পরিণত হওয়া অনার কিলিংয়ের শিকার কিনা, সেটিও যাচাই করে দেখছেন তদন্তকারীরা।
মানবাধিকার কর্মীদের মতে, পাকিস্তানে প্রতিবছর শত শত মানুষ অনার কিলিংয়ের শিকার হন, যাদের অধিকাংশই নারী। পরিবারের সম্মান রক্ষার নাম দিয়ে স্বজনরাই এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকেন।
নিহত কিশোরীর ফোন নিজেদের জিম্মায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তারা আরও জানিয়েছেন, হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে আনোয়ারের শ্যালককেও আটক করা হয়েছে।
অনার কিলিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতেই হবে। ২০১৬ সালে এই সংক্রান্ত আইন সংশোধনের আগ পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরা ক্ষমা করে দিলে সাজা এড়িয়ে বহাল তবিয়তে বেরিয়ে যেতেন অপরাধীরা।
ভিন দেশে বসেও অনার কিলিংয়ের অপরাধে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালে ইতালিতে এক পাকিস্তানি দম্পতিকে নিজেদের ১৮ বছর বয়সী কন্যাকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় বাবা-মায়ের হাতে মৃত্যু হয় ওই মেয়ের।