ব্রাজিলের নির্বাচনি ফল পাল্টে দেওয়ার দায়ে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত হলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তার বিরুদ্ধে ২০২২ সালের নির্বাচন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নস্যাৎ করার চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সরকারের তিনটি অঙ্গের ওপরই সর্বময় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার এক চক্রান্তে জড়িত ছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। তারা এমনকি নিজেদের পরিকল্পিত শাসন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রতিষ্ঠার নকশা তৈরি করেছিলেন।
দেশটির চার দশকের গণতন্ত্রকে অপরাধী সংগঠনের মাধ্যমে হুমকির মুখে ফেলার দায়ে বলসোনারো ও তার রানিং মেট জেনারেল ওয়াল্টয়ার ব্রাগা নেট্টোর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন প্রসিকিউটর জেনারেল পাওলো গোনেট। গতকালের অভিযোগের কারণে চরম ডানপন্থি এই নেতার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন সম্ভাবনার প্রায় নিভু নিভু প্রদীপ আরও ম্রিয়মাণ হয়ে পড়লো।
২০২২ সালের নির্বাচনে ডানপন্থিদের কোনও রকমে পরাজিত করে ক্ষমতায় আসেন সিল্ভা। তার কিছুদিন পর ২০২৩ সালের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনী ফল অস্বীকার করে রাজধানী শহর ব্রাসিলিয়াতে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন বলসোনারোর সমর্থকরা। ওই ঘটনা নিয়ে প্রায় দু বছর তদন্ত শেষে ব্রাজিলের ফেডারেল পুলিশ প্রতিবেদন জমাদানের কয়েক মাস পরেই সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হলো।
সে সময় অনেক বিক্ষোভকারী স্বীকার করেছিলেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল যথেষ্ট নৈরাজ্য তৈরি করা যেন সামরিক অভ্যুত্থানের পথ সুগম হয়। এদিকে, গত বছরের শেষ দিকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিল্ভা ক্ষমতা গ্রহণের আগেই তাকে হত্যার চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকালের অভিযোগপত্র অনুযায়ী, একাধিক সামরিক কর্মকর্তাসহ মোট ৩৪ জন নির্বাচন নস্যাৎ করার চক্রান্তে জড়িত ছিলেন। তাদের মধ্যে আছেন সাবেক নৌ কমান্ডার আলমির গারনিয়ার সানতোস এবং বলসোনারোর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল (অব.) আগুসতো হেলেনো। প্রসিকিউটরদের দাবি, বলসোনারোর চক্রান্তে সিল্ভাকে বিষপ্রয়োগে হত্যার প্রচেষ্টাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ওই অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, কর্তৃত্ববাদী মনোভাব দেখানোর মানসে অপরাধী সংগঠন ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়। এই সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন জইর মেসিয়াস বলসোনারো।
সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন বলসোনারো কোনও আইন ভঙ্গের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। তার দাবি, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শত্রু দমন প্রকল্পের শিকার হয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার বলসোনারোর আইনজীবীদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো কোনও কার্যকলাপে কখনও সমর্থন দেননি সাবেক প্রেসিডেন্ট।