ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতার্তেকে বুধবার (১২ মার্চ) হেফাজতে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার নেতৃত্বে মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। মালয়েশিয়া ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দুতার্তে বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাবাহিনী আমার নেতৃত্বে কাজ করেছে। তাদেরকে রক্ষা করব বলে আমি কথা দিয়েছি। সব কৃতকর্মের দায় আমি মাথা পেতে নিচ্ছি।
হেগভিত্তিক আদালত আইসিসির বিশ্বাস, পরোক্ষভাবে হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার দায়ে অভিযোগ গঠনের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলাকালে হাজার হাজার মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে।
দুতার্তে বলেছেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে আমি বরাবরই বলে আসছি, ওই অভিযান ছিল আমার কাজ। আমি পুরোপুরি এর দায়ভার গ্রহণ করছি।
আটকের সম্পূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে অবগত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাইভেট জেটে করে রটারডামে পৌঁছেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। তাকে আদালতে কাস্টডিতে নেওয়া হয়েছে।
দুতার্তের আকস্মিক গ্রেফতারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আইসিসি কার্যালয়ের বাইরে কয়েক ডজন মানুষ জড়ো হয়ে সাবেক প্রেসিডেন্টের মুক্তির দাবি জানান।
৫০ বছর বয়সী ডাডস কুইবিন বলেছেন, দুতার্তেকে কোনও সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আটক করা হয়নি। তাকে হুট করে একটি বিমানে চড়িয়ে কাস্টডিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা ছিল একরকম অপহরণ।
তবে এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না অনেকে। তাদের একজন মাদক বিরোধী অভিযানে ভুক্তভোগী পক্ষের আইনজীবী গিলবার্ট আন্দ্রেস। তিনি বলেছেন, আমার মক্কেলদের একমাত্র চাওয়া ছিল দুতার্তের বিচার। তাদের প্রার্থনায় সাড়া দেওয়ার জন্য আমরা স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞ।
তিনি আরও বলেছেন, দুতার্তের আটকের মধ্য দিয়ে আরও একবার প্রমাণিত হলো, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
দুতার্তের গ্রেফতারে সন্তোষ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ভলকার টুর্ক বলেছেন, হাজারো মানুষকে হত্যার দায় পরিশোধের জন্য এটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
অবশ্য আইসিসিকে রাজনীতিকরণ ও দ্বিমুখী নীতি পরিহার করতে বলে চীন জানিয়েছে, দুতার্তের মামলা তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।