রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চল থেকে শেষ ইউক্রেনীয় সেনাকেও বিদায় করবার জন্য রবিবার (১৬ মার্চ) লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনারা। কিছু স্থানে কিয়েভের সেনাদের সীমান্তের কাছে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশিষ্ট রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইউরি পদোলিয়াকা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পদোলিয়াকা জানিয়েছেন, রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনার মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। অনেক স্থানে ইউক্রেনীয়দের ঠেলে সীমান্তের কাছে নিয়ে যাওয়া হলেও পিছু হটার সময়েই তারা পালটা হামলা চালাচ্ছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর গত আগস্টে সবচেয়ে অকল্পনীয় হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে কুরস্ক অঞ্চলের দখল নেয় তারা। ১৯৪১ সালে নাৎসি বাহিনীর হামলার পর রুশ ভূখণ্ড কখনও বহিঃশত্রুর পদাতিক বাহিনীর হামলার শিকার হয়নি।
তবে তৎক্ষণাৎ পালটা হামলা চালায় মস্কো। ধীরে হলেও অগ্রযাত্রা বজায় রেখে একটু একটু করে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করতে থাকে রুশ বাহিনী।
চলতি মাসে রুশ বাহিনীর হামলার গতি আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পায়। ফলে কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের অধিকৃত ভূমির আয়তন নেমে আসে মাত্র ১১১ বর্গকিলোমিটারে।
উল্লেখ্য, গত বছর কিয়েভ দাবি করেছিল, কুরস্কের ১৩৬৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা তাদের দখলে রয়েছে।
ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় পক্ষের রণক্ষেত্র মানচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কুরস্কের কিছু স্থানে এখনও ইউক্রেনীয় ঘাঁটি রয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, ওই এলাকায় বিপুল সংখ্যক মাইন পুঁতে রাখা আছে। তারা সেগুলো অপসারণ করছে।
এদিকে, ইউক্রেনীয় সেনারা কুরস্কে রুশ বাহিনী কর্তৃক অবরুদ্ধ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবরুদ্ধ সেনাদের হত্যা না করতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে অনুরোধ করেছেন তিনি। নইলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বীভৎসতম হত্যাকাণ্ডের আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তার উদ্বেগ আমলে নিয়ে পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনীয় সেনারা অস্ত্র ফেলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করলে তাদের প্রাণভিক্ষা দেওয়া হবে। রাশিয়ার নিজস্ব আইন ও আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী তাদের সঙ্গে আচরণবিধি বজায় রাখা হবে।
অবশ্য ইউক্রেনীয় সেনাদের অবরুদ্ধ হওয়াকে রাশিয়ার ছড়ানো গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে সেখানে তার সেনারা সংকটে আছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি। জেলেনস্কি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, কুরস্কের সীমান্তবর্তী ইউক্রেনীয় অঞ্চল সামিতে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া।