ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করার খুব কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছে গেছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ওই বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ওয়াশিংটনের শর্তে তেহরান অনেকটাই রাজি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্য সফরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য আমরা ইরানের সঙ্গে খুবই গুরুত্বের সহিত আলোচনা করছি।
ট্রাম্প বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি থামানোর দুটি ভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে। এরমধ্যে একটি বেশ বেশ বেশ ভালো। আর অন্যটি অনেকটাই সহিংস। আমি দ্বিতীয় পদক্ষেপ এড়াতে চাই। আলোচনা যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে, দ্বিতীয় রাস্তায় যাওয়া ছাড়াই কাজ হবে বলে আমি আশাবাদী।
আলোচনা নিয়ে অবগত এক ইরানি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে এখনও কিছু ক্ষেত্রে মতপার্থক্য রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে। এদিকে, ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, নিজ মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অধিকার থেকে তারা সরে আসবে না। তবে সমৃদ্ধকরণের মাত্রা হ্রাস এবং উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম মজুদের পরিমাণ কমাতে আপত্তি নেই তেহরানের। তবে এই মাত্রা ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির উল্লিখিত হারের কম হতে পারবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইরান।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, গত রোববার ওমানে অনুষ্ঠিত আলোচনার পর আরও কয়েক দফা বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তেহরান-ওয়াশিংটন একজায়গায় সম্মত হয়েছে-তারা উভয়েই সামরিক পন্থার বদলে কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। তবে, বেশ কিছু জায়গায় দু পক্ষেরই আপত্তির কারণে সমঝোতায় আসতে পারছেন না মধ্যস্থতাকারীরা। সামরিক আগ্রাসনের ঝুঁকি এড়াতে চাইলে এই মতবিরোধ প্রশমন করতে উভয় পক্ষেরই নমনীয় হতে হবে।
তবে, দু পক্ষের কেউই ছেড়ে কথা বলছেন না। যেমন, মঙ্গলবার এক বক্তব্যে ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক সত্তা বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প। স্বাভাবিকভাবেই তার মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ইরান।
ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইরানকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছেন ট্রাম্প। তিনি মনে করেন, চাইলেই আমাদের ধামকি দিয়ে, নিষেধাজ্ঞার চাপে রেখে পরে এসে মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো যায়। অথচ তারাই মধ্যপ্রাচ্যে সবরকম অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী।
ইরানের অভিযোগ, তারা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিবেচনা করলেও, যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বা শিথিলের কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। পারমাণবিক কর্মসূচির জের ধরে ইরানের ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় দেশটির অর্থনীতিতে প্রায় ধস নেমেছে।