চীনের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তারকার কমপ্যাক্ট বাইনারি সিস্টেম আবিষ্কার করেছেন। একটিতে রয়েছে মিলিসেকেন্ড পালসার এবং অন্যটিতে আছে একটি হিলিয়াম নক্ষত্র। বিরল এ আবিষ্কার নক্ষত্রের বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে ভবিষ্যৎ গবেষণায় নতুন দিক উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। চীনা সংবাদমাধ্যম সিএমজি এ খবর জানিয়েছে।
দেশটির জাতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণাগারের অধ্যাপক হান চিনলিনের নেতৃত্বে পরিচালিত এ গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম রেডিও টেলিস্কোপ— ফাইভ-হানড্রেড-মিটার অ্যাপারচার স্ফেরিক্যাল রেডিও টেলিস্কোপ বা ফাস্ট, যার নির্মাতা চীন। গবেষণার বিস্তারিত বৃহস্পতিবার (২২ মে) সায়েন্স অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে।
পালসার হলো এমন এক ঘূর্ণায়মান নিউট্রন তারকা, যা সুপারনোভার মাধ্যমে ভেঙে পড়া বিশাল নক্ষত্র থেকে তৈরি হয়। এরা চৌম্বক মেরু থেকে রেডিও তরঙ্গের জোড়া বিকিরণ ছড়ায়, যা পৃথিবীতে পালস আকারে ধরা পড়ে।
ফাস্ট-এর দারুণ সংবেদনশীলতা ও শনাক্তকরণ ক্ষমতার ফলে গবেষকরা ১০ দশমিক পাঁচ পাঁচ মিলিসেকেন্ড স্পিন পিরিয়ড বিশিষ্ট একটি পালসার শনাক্ত করেন, যার কক্ষপথের ব্যাস পাঁচ লাখ কিলোমিটার এবং ঘূর্ণনকাল তিন দশমিক ছয় ঘণ্টা। এর সংযুক্ত তারকাটির ভর সূর্যের চেয়ে এক দশমিক ছয় গুণ পর্যন্ত হতে পারে।
বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যায়, এই যুগল ব্যবস্থা সম্প্রতি একটি ধাপের মধ্য দিয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়ায় ঘন একটি কক্ষপথের সৃষ্টি হয়েছে। এই ধরনের ব্যবস্থা খুবই দুর্লভ ও স্বল্পস্থায়ী। গোটা গ্যালাক্সিতে এমন বাইনারি সিস্টেম বড়জোর কয়েক ডজন থাকতে পারে।
এই আবিষ্কার নক্ষত্রের বিবর্তন, কম্প্যাক্ট তারা-ভিত্তিক ভর আকর্ষণ প্রক্রিয়া এবং গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভের উৎস হিসেবে যুগল তারকার সংমিশ্রণ—তিনটি ক্ষেত্রেই তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কুইচৌ প্রদেশের একটি সুবিশাল প্রাকৃতিক গহ্বরে ফাস্ট টেলিস্কোপ স্থাপন করা হয়েছে। এটি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে।