লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস শহরে কারফিউ জারি করেছেন। টানা কয়েকদিনের ভাঙচুর ও সহিংসতার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেয়র ব্যাস বলেছেন, আমি স্থানীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছি। ভাঙচুর ও লুটপাট রোধে শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকায় (ডাউনটাউন) কারফিউ জারি করা হয়েছে।
রয়টার্সের দাবি অনুযায়ী, এই কারফিউ কয়েকদিন বহাল থাকতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন মেয়র ব্যাস।
ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় চলতি সপ্তাহে এই বিক্ষোভের সূচনা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় প্রথমে ন্যাশনাল গার্ড পরে মেরিন সদস্য মোতায়েন করেছিল কর্তৃপক্ষ। তবে, বিক্ষোভের আগুন এখন লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে।
সিয়াটল, অস্টিন, শিকাগো এবং ওয়াশিংটন ডিসির মতো শহরেও বিক্ষোভের সূত্রপাত হচ্ছে। অংশগ্রহণকারীরা আইসিই-বিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছেন। সরকারি কার্যালয়ের আশেপাশে তারা যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেছেন।
কিছু স্থানের বিক্ষোভ যেমন শান্তিপূর্ণ ছিল তেমনি কিছু স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়েছে এবং একাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিউ ইয়র্ক, স্যান ফ্রান্সিসকো এবং স্যান্টা অ্যানাতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে অভিবাসন বিরোধী অভিযানের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
আন্দোলনকারীরা সামনে আরও বড় ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘নো কিংস’ কর্মসূচি, যা শনিবার দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিনেই ট্রাম্পের ঘোষিত সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে ওয়াশিংটনে।
এদিকে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসোম মঙ্গলবার ট্রাম্পের পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেন। এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন, ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেসের ওপর এক ধরনের সামরিক জাল ফেলেছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ট্রাম্প প্রশাসন প্রায় পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েনের প্রতিক্রিয়ায় এই মন্তব্য করেন নিউসোম। প্রাথমিকভাবে তাদেরকে সরকারি ভবন পাহারা দিতে আনা হলেও, এখন তারা অভিবাসনবিরোধী এজেন্টদের গ্রেফতারে সহায়তা করছেন।
নিউসোম অভিযোগ করেন, ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি এখন আর শুধু অপরাধীদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে না, বরং বাড়ির দারোয়ান, মালি, দিনমজুর এবং দর্জিদের মতো সাধারণ শ্রমজীবী মানুষরাও এর শিকার হচ্ছেন।