ছোট একটা কাঁচের বোতলে চিরকুট পুরে সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন স্কটল্যান্ডের অ্যালাইনা বেরেসফোর্ড। প্রায় তিন দশক পর সেটি খুঁজে পেয়েছেন নরওয়ের পিয়া ব্রডম্যান। সেই চিঠির উত্তরও দিয়েছেন তিনি।
১৯৯৪ সালে একটি শিক্ষা সফরে সাগরপাড়ে গিয়েছিলেন অ্যালাইনা। জল নিয়ে একটি প্রকল্পে কাজ করছিলেন তারা। সফরের শেষ পর্যায়ে ১২ বছরের অ্যালাইনা একটি চিরকুট লিখে বোতলে পুরে দেন। সেই হাতে লেখা পুরোনো চিঠিসমেত উত্তর পাঠিয়েছেন নরওয়ের স্বেচ্ছাসেবক পিয়া।
মূল চিরকুটে লেখা ছিল: প্রিয় সন্ধানকারী, আমার নাম অ্যালাইনা স্টেফান। আমার বয়স ১২ বছর। আমি পোর্টনোককিতে বাস করি এবং আমি পানি নিয়ে একটি প্রকল্পে কাজ করছি। তাই বোতলে করে একটি চিরকুট পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার শিক্ষিকার স্বামী এগুলো নিয়ে সমুদ্রের মাঝে গিয়ে ভাসিয়ে দেবেন।
সেখানে আরও লেখা ছিল, চিরকুটটি যিনি খুঁজে পাবেন, দয়া করে নিজের পরিচয়, কোথায় থাকেন, আমার চিরকুটটি কোথা থেকে পেলেন এবং সম্ভব হলে নিজের এলাকার কিছু তথ্য জানাবেন।
প্রায় তিন দশক জলে ভেসে বোতলটি নর্থ সি’র উপকূলে নরওয়েজিয়ান দ্বীপপুঞ্জের কাছে গিয়ে পৌঁছায়। সৈকত পরিষ্কারের দায়িত্বে থাকা পিয়া এটি খুঁজে পেয়ে একটি পোস্টকার্ডসহ চিরকুটের উত্তর দেন।
বিবিসি স্কটল্যান্ডকে অ্যালাইনা বলেন, পিয়ার উত্তরের সঙ্গে মূল চিঠিটিও পেয়েছেন তিনি। এতদিন পরও তার লেখা চিরকুট প্রায় অপরিবর্তিত আছে দেখে যারপরনাই অবাক হয়েছেন তিনি।
ফিরতি চিঠিতে লেখা ছিল: আমার নাম পিয়া এবং আমি জার্মানিতে থাকি। আজকে আপনার চিরকুটটি আমি নরওয়ের নিকটবর্তী ছোট একটি দ্বীপ লিশেলোয়া থেকে খুঁজে পেয়েছি।
তিনি আরও লিখেছেন, আমি গত চারমাস ধরে এখানকার সৈকতে পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। আমার পোস্টকার্ডে আপনি আমাদের ওয়ার্কবোট নিমো এবং সেইলবোট ফনের ছবি দেখবেন। পুনশ্চ, আমার বয়স ২৭ এবং আমি পাহাড় বাওয়া আর নৌকা চালানো খুব পছন্দ করি।
প্রায় ৩০ বছর পরও আগের ঠিকানায় চিঠির উত্তর পাওয়ায় প্রথমে হতভম্ব হয়ে যান অ্যালাইনা। তিনি বলেন, এখন আমার বয়স ৪২। ৩১ বছর আগে মাত্র বারো বছর বয়সে আমার চিরকুটের জবাব পেয়ে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমি মাঝে দুটো ভিন্ন ঠিকানায় ছিলাম। তবে কিছুদিন হলো বাবা-মার সঙ্গে পূর্বের বাড়িতে অবস্থান করছি।
তথ্যসূত্র: বিবিসি