X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

দেশ পরিচিতি: নাইজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৩ মে ২০২৩, ০৮:১০আপডেট : ০৩ মে ২০২৩, ০৮:১০

পশ্চিম আফ্রিকার স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র নাইজার। নাইজার নদীর নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে দেশটির। সীমান্তবর্তী দেশগুলো হলো লিবিয়া, চাদ, নাইজেরিয়া, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, মালি ও আলজেরিয়া।

সাহারা মরুভূমির প্রান্তে অবস্থিত বিস্তীর্ণ দেশ নাইজার। ফ্রান্সের কাছ থকে ১৯৬০ সালে স্বাধীন হয় দেশটি। স্বাধীনতার পর বেশ কয়েকটি অভ্যুত্থানের কারণে দেশটির রাজনীতিতে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করেছিল।

খরাপ্রবণ দেশটি বর্তমানে সশস্ত্র জঙ্গিবাদ ও দারিদ্রে নিমজ্জিত। অর্থনীতিকে সচল রাখতে তেল ও স্বর্ণের খনি অনুসন্ধানে রয়েছে দেশটি।

দেশটির জঙ্গিদের দমাতে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র সেনা মোতায়েন করেছে।

নাইজার সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • রাষ্ট্রীয় নাম: রিপাবলিক অব নাইজার
  • রাজধানী: নিয়ামি
  • আয়তন: ১২ লাখ ৬৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার
  • জনসংখ্যা: ২ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার
  • ভাষা: ফরাসি, হাউসা
  • গড় আয়ু: ৬০ বছর (পুরুষ), ৬২ বছর (নারী)

নেতৃত্ব

প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজোউম। ছবি: রয়টার্স

প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজোউম

২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট হন বাজোউম। এর আগে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ১৯৬০ সালে স্বাধীন হওয়ার পর নাইজারের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তিনি।

দেশটির পশ্চিমে ও সাহেল অঞ্চলের সীমান্তজুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী জঙ্গিবাদ দমনে মনোযোগী তিনি।

সংবাদমাধ্যম

দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম রেডিও। রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম ছাড়াও বেশ কয়েকটি বেসরকারি রেডিও স্টেশন চালু আছে দেশটিতে।

তবে আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত দেশটির বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যম। এছাড়া সংবাদমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সরকারের। সমালোচনামূলক প্রতিবেদনের জন্য আটক এবং বিচারের মুখোমুখি হতে হয় সাংবাদিকদের।

দেশটির মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ অনলাইন মিডিয়া ব্যবহার করে।

নাইজারের ইতিহাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দী - অঞ্চলটি ট্রান্স-সাহারান বাণিজ্যের একটি এলাকায় পরিণত হয়। এতে নেতৃত্ব দেয় উত্তর থেকে তুয়ারেগ উপজাতিরা।

৩০০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ: বেশিরভাগ অঞ্চল ঘানা সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। বেশ কয়েকটি প্রধান পশ্চিম আফ্রিকার সাম্রাজ্যের মধ্যে একটি ছিল ঘানা। এই সাম্রাজ্য ট্রান্স-সাহারান নিয়ন্ত্রণ করে সোনা, লবণ, অন্যান্য মূল্যবান পণ্য এবং দাস বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত।

৬৩২-৭০০ খ্রিস্টাব্দ: উত্তর আফ্রিকায় আরবদের আক্রমণ এবং পরবর্তীতে ইসলামের বিস্তার।

১২২৬-১২৩৪ খ্রিস্টাব্দ: ১২৩৪ সালে ক্রিনার যুদ্ধের পর মালি সাম্রাজ্য উচ্চ নাইজার অববাহিকায় প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হয়।

১৪৬৪-১৫৯১: মালি সাম্রাজ্য কিছু ক্ষমতা হারায়, সোনার ব্যবসায় তার আধিপত্য হ্রাস পায়। সোনহাই সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে মালি সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চলের অর্ধেকের ওপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করে।

১৫৯১: টন্ডিবির যুদ্ধ। সোনহাই বাহিনী মরক্কোর সাদি রাজবংশের সেনাবাহিনীর কাছে পরাজিত হয়। যারা টিমবুকটুকে তাদের রাজধানী করে।

সোনহাই সাম্রাজ্য একটি বাণিজ্য ক্রসরোড হিসেবে এই অঞ্চলের ভূমিকার ইতি টানে। চাদ হ্রদের আশেপাশে কানেম-বোর্নু সাম্রাজ্য, উত্তরে আইর সালতানাত এবং হাউসা রাজ্য এবং অন্যান্যসহ ছোট রাজ্যে বিভক্ত এলাকায় পরিণত হয় অঞ্চলটি।

১৮৯০: এই অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে ফ্রান্স।

১৯০৪: নাইজার সামরিক অঞ্চল তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ছিল এখনকার বুরকিনা ফাসো, মালি এবং নাইজারের দেশগুলো। রাজধানী ছিল নিয়ামে।

১৬ শতকের আগাদেজ মসজিদ। ছবি: রয়টার্স

১৯২২: ফরাসি পশ্চিম আফ্রিকার মধ্যে একটি উপনিবেশে পরিণত হয় নাইজার।

১৯৫৮: ফরাসি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্র হয়ে ওঠে নাইজার।

১৯৬০: ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে নাইজার। কিন্তু মারাত্মক খরায় বিধ্বস্ত হয়ে যায় দেশটি। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অভ্যুত্থানের সূচনা হয়।

১৯৭৪-১৯৯১: প্রথম সামরিক শাসন। আশির দশকে সেনাবাহিনী ধীরে ধীরে রাজনীনিতে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে।

১৯৯১: বহু দলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বেসামরিক শাসন শুরু।

১৯৯০-৯৫: উত্তর নাইজারে স্বাধীনতার জন্য তুয়ারেগ বিদ্রোহ, আঞ্চলিক দুর্ভিক্ষের কারণে এই বিদ্রোহের সূত্রপাত।

১৯৯৬-৯৯: আবার ক্ষমতায় সামরিক হস্তক্ষেপ।

১৯৯৯-২০০৯: বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধার।

২০০৭-০৯: উত্তর মালি এবং নাইজারের সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে বসবাসকারী তুয়ারেগ জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে তুয়ারেগ বিদ্রোহ।

২০১০-২০১১: সংবিধান সংশোধন করে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ বাড়ানোর প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়ায় সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করে।

২০১০: গণভোটে বেসামরিক পুনরুদ্ধারের কাঠামোযুক্ত নতুন সংবিধান অনুমোদন।

২০১১: বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধার করা হয় এবং মোহামাদৌ ইসোউফু প্রেসিডেন্ট হন।

 

/এটি/এএ/
সম্পর্কিত
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে পদদলিত হয়ে ২৯ শিক্ষার্থী নিহত
মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন বিমান বাহিনীর ১২৫ সদস্য
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরও ৩৬টি দেশে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (১ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (১ জুলাই, ২০২৫)
বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে
বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে
দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪২২ শ্রমিক
দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪২২ শ্রমিক
৪০ শতাংশ কৃষক পান না ন্যায্য মজুরি: জরিপ
৪০ শতাংশ কৃষক পান না ন্যায্য মজুরি: জরিপ
সর্বাধিক পঠিত
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস উপদেষ্টা আসিফ ও সাংবাদিক জুলকারনাইনের
ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস উপদেষ্টা আসিফ ও সাংবাদিক জুলকারনাইনের
‘ইউ আর পেইড বাই দ্য গভর্নমেন্ট’
এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থ উপদেষ্টা          ‘ইউ আর পেইড বাই দ্য গভর্নমেন্ট’