পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ২০০ সেনাকে হত্যার দাবি করেছে আল কায়েদা-ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠী জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম)। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স বৃহস্পতিবার জানায়, জেএনআইএম তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে এই দাবি করেছে।ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে বুধবার সংস্থাটি জানিয়েছিল, ওই গোষ্ঠী প্রথমে ৬০ সেনা হত্যার দাবি করেছিল। রয়টার্স এ দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। বুরকিনা ফাসো সরকারের পক্ষ থেকেও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
গত রবিবার সকালে দেশের উত্তরের শহর জিবোর একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। নিরাপত্তা সূত্রগুলোর বরাতে রয়টার্স জানায়, শত শত জিহাদি যোদ্ধা ঘাঁটিটিতে হামলা চালিয়ে সেটি ধ্বংস করে। পুলিশ স্টেশন ও স্থানীয় বাজারেও হামলা হয়।
রয়টার্সের হাতে আসা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, সামরিক ঘাঁটি ও একটি কারাগারের আশপাশে আগুনে পোড়ার দাগ, ধোঁয়ায় ঢেকে থাকা হাসপাতাল ও বাজার।
ঘাঁটি হামলার বিষয়ে সরকারিভাবে কোনও হতাহতের সংখ্যা জানানো না হলেও, জিবোর তিন বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, ওই হামলায় বহু সেনা ও বেসামরিক লোকজন নিহত হয়েছেন। হামলার পর জেএনআইএম ওই ঘাঁটির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এর আগে সাইট ইন্টেলিজেন্স জানায়, বুরকিনা ফাসোতে জেএনআইএম প্রধান উসমান দিকো একটি ভিডিও বার্তায় শহরবাসীকে নিরাপত্তার স্বার্থে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানান।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২২ সালে নিরাপত্তার অজুহাতে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক সরকার জিহাদি হামলা প্রতিরোধে ক্রমেই ব্যর্থ হচ্ছে। চলতি মাসের ১১ তারিখে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ট্রাওরের রাশিয়া সফরের দিনই জেএনআইএম একাধিক হামলার দায় স্বীকার করে।
বুরকিনা ফাসো, মালি ও নাইজারে ইসলামপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো সরকারের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র দখলের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করছে বলে জানিয়েছে কনফ্লিক্ট আর্মামেন্ট রিসার্চ নামের একটি সংস্থা।
সংস্থাটি জানায়, এই অঞ্চলে সালাফি জিহাদি গোষ্ঠীগুলো যে কৌশল অনুসরণ করছে—রাষ্ট্রীয় অস্ত্রশস্ত্র দখল করে নিজেদের সামরিক ও প্রচারমূলক শক্তি বাড়ানো—তা অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে।