ডেঙ্গু জ্বরের বিতর্কিত টিকা পুনরায় ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে ফিলিপাইন। এর আগে বেশ কয়েকজন শিশুর মৃত্যুর কারণে ডেঙ্গু টিকার ব্যবহার বাতিল করেছিল দেশটি। এই বছর দেশটিতে ৪৫০ জনের মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
৭ লাখ ৩৪ হাজার শিশুকে ডেঙ্গু রোগের টিকা দেওয়া হয়েছিল ফিলিপাইনে। কিন্তু বেশ কয়েকজন শিশু মৃত্যুর ঘটনায় এ নিয়ে দেশটিতে বিতর্ক তৈরি হয়। দুটি কংগ্রেশনাল তদন্ত ও একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু হয়। ডেঙ্গু টিকা দিতে অভিভাবকদের অনীহা শুরু হয়।
২০১৭ সালের শেষ দিকে ফিলিপাইন ডেঙ্গভাক্সিয়া টিকা বিক্রি, বিতরণ ও বিপণনে সানোফিকে নির্দেশ দেয়। সানোফি জানিয়েছিল, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই টিকা ব্যবহারের ফলে পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।
ডেঙ্গভাক্সিয়া নামের এই টিকা উৎপাদন করেছে ফরাসি ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সানোফি। সংস্থাটির মুখপাত্র সালভাদো পানেলো বলেছেন, ফিলিপাইনের সরকার যদি এটা পুনরায় ব্যবহার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। সাংবাদিকদের মুখপাত্র বলেন, যদি অতীতে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গভাক্সিয়া কার্যকর বলে প্রমাণিত হয় তাহলে এসব মানুষের ওপর এই টিকার ব্যবহার ডেঙ্গু আক্রান্তদের মৃত্যু কমিয়ে আনতে পারবে।
২০১৯ সালের মার্চে ফিলিপাইনের আইন মন্ত্রণালয় জানায়, সানোফি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার কারণ তারা পেয়েছেন। দেশটির সাবেক ও বর্তমান স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, দশটিরও বেশি মৃত্যুর ঘটনায় ডেঙ্গভাক্সিয়ার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। যদিও সানোফি কর্মকর্তারা বারবার দাবি করছেন, টিকাটির ব্যবহার নিরাপদ ও কার্যকর।
কোম্পানিটির মুখপাত্র পানেলো বলেন, সরকারের উচিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অবলম্বন করে এই টিকা দেওয়া উচিত। টিকা দেওয়ার আগে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করতে হবে। এতে করে নিশ্চিত হওয়া যাবে সংক্রমণ ছড়াবে কিনা।
মুখপাত্র আরও বলেন, নতুন করে টিকা প্রদান শুরু হলে অতীতের বিতর্কে জড়িতদের যে মামলা রয়েছে তাতে কোনও প্রভাব পড়বে না।
এই বছর ফিলিপাইনে ১ লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতি তিন-চার বছর পর পর ফিলিপাইনে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। দেশটিতে সর্বশেষ প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিলো ২০১৬ সালে। সে প্রবণতা অনুযায়ী, এ বছরও আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে মিমারোপা, ওয়েস্টার্ন ভিসায়াস, সেন্ট্রাল ভিসায়াস ও নর্দার্ন মিন্দানাও-সহ চারটি অঞ্চলে মহামারি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় ২ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস, যা ফিলিপাইনের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ।