জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে নির্বাচনি প্রচারণায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। শুক্রবার সকালে দক্ষিণাঞ্চলীয় নারা শহরে ভাষণ দেওয়ার সময় দুটি গুলিবিদ্ধ হন। পরে কাছের হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি তাকে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হত্যাকারী হিসেবে ৪১ বছরের এক সন্দেহভাজন পুলিশের কাস্টডিতে রয়েছে।
এক আবেগঘন সংবাদ সম্মেলনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি নৃশংস ও বিদ্বেষ পরায়ণ এবং মেনে নেওয়ার মতো না।
জাপানে বন্দুক হামলার ঘটনা বিরল। দেশটিতে হ্যান্ডগান নিষিদ্ধ এবং রাজনৈতিক সহিংসতার খবর প্রায় শোনাই যায় না।
২০১৪ সালে বন্দুক সংশ্লিষ্ট ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬টি। দেশটিতে অস্ত্র কিনতে হলে কঠোর পরীক্ষা ও মানসিক স্বাস্থ্য টেস্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এমনকি এরপরও শুধু শটগান ও এয়ার রাইফেল কেনার অনুমতি পাওয়া যায়।
এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাতে বিশ্বনেতারা বিলম্ব করেননি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই হামলাকে একটি ঘৃণ্য হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
জাপানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রাহম এমানুয়েল বলেছেন, আবে ছিলেন জাপানের একজন অসাধারণ নেতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেছেন, হামলায় ঘটনায় তার দেশ মর্মাহত। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাকে সিনো-জাপানি সম্পর্কে জড়ানো উচিত না।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ টুইটারে লিখেছেন, জাপানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গুলিবিদ্ধ হওয়ার মর্মান্তিক খবর পেয়েছি।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেত্নো মারসুদি বলেছেন, জি-২০ জোটভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পক্ষ থেকে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বলেছেন, আমি মনে করি আমার মতো সবাই অবাক হয়েছেন। তাইওয়ান ও জাপান উভয়েই আইনের শাসনে গণতান্ত্রিক দেশ। আমার সরকারের পক্ষ থেকে সহিংসতা ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে চাই।
তিনি আরও লিখেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবে শুধু যে আমার ভালো বন্ধু ছিলেন তা নয়, তিনি তাইওয়ানেরও একজন বন্ধু ছিলেন। তিনি অনেক বছর ধরে তাইওয়ানকে সমর্থন করেছেন।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স