ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি চিঠি লিখে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) থেকে পাওনা ৮০০ মিলিয়ন ডলার দ্রুত পরিশোধের জন্য হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। ২৭ আগস্ট এই চিঠি তিনি লিখেছেন বলে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকনোমিক টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
চিঠিতে আদানি লিখেছেন, আমরা যখন বাংলাদেশের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করে যাচ্ছি তখন ঋণদাতারা আমাদের ওপর কঠোর চাপ দিচ্ছে। আমি আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি, যাতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে পাওনা ৮০০ মিলিয়ন ডলারের দ্রুত পরিশোধ নিশ্চিত হয়।
চিঠিটির একটি অনুলিপি দেখে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি।
এতে সরবরাহের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখায় নিয়মিত বিল পরিশোধ এবং পাওনা পরিশোধে প্রতিমাসে উল্লেখযোগ্য অর্থ প্রদানের জন্য আদানি অনুরোধ করেছেন।
এর আগে ২৭ আগস্ট ইকোনমিক টাইমস জানায়, বিপিডিবি প্রায় আট থেকে নয় মাসের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আদানি পাওয়ারের পাওনা ৮০০ মিলিয়ন ডলার।
আদানি পাওয়ার ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা থেকে একটি ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। যা একটি বিশেষ সঞ্চালন করিডোরের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুন থেকে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। কেয়ার রেটিংসের তথ্য অনুযায়ী, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বিপিডিবির সঙ্গে ২৫ বছরের একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি রয়েছে।
প্রতিমাসে প্রায় ৯০-৯৫ মিলিয়ন ডলার বিলের বিপরীতে কোম্পানিটিকে প্রায় ৪০-৪৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হচ্ছে। যার ফলে পাওনা অর্থ জমা হয়ে যাচ্ছে।
আদানি পাওয়ার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
গৌতম আদানি তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, কোভিডের তিনটি ধাক্কার পরও আমরা ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে অত্যাধুনিক একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সংশ্লিষ্ট সঞ্চালন অবকাঠামো তৈরি করেছি, যা মাত্র সাড়ে তিন বছরে সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভবিষ্যতেও আমাদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সুযোগ অন্বেষণ করতে আগ্রহী।
আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে অন্যান্য খাতেও জড়িত। যেমন রূপশী, নারায়ণগঞ্জ ও মংলায় তেল শোধনাগার পরিচালনা করছে এবং বগুড়ায় চাল প্যাকেজিং ও রাইস ব্র্যান তেল প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের খাদ্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছি, যেমন রূপচাঁদা, মিজান ও ফরচুন ব্র্যান্ডের ভোজ্য তেল ও প্রিমিয়াম চাল সরবরাহ করছি। আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সম্প্রদায় ও স্টেকহোল্ডারদের সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞ।