ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে রাশিয়ায় আরও সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। যদিও আগে পাঠানো সেনারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে এবং কিছু সেনা বন্দি হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) এক বিবৃতিতে জানায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সেনা পাঠানোর চার মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হতাহত ও বন্দির ঘটনা ঘটার পরও উত্তর কোরিয়া দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ এবং নতুন করে সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
জেসিএস জানায়, উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পিয়ংইয়ং একটি গুপ্তচর স্যাটেলাইট এবং আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উৎক্ষেপণের প্রস্তুতিও নিচ্ছে, যদিও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের কোনও ইঙ্গিত নেই।
চলতি মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, উত্তর কোরিয়ার দুই সেনা রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে বন্দি হয়েছে। গত বছরের শরৎকালে যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথমবার ইউক্রেন উত্তর কোরিয়ার সেনাদের বন্দি করলো।
ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্লেষকদের মতে, পিয়ংইয়ং প্রায় ১১ হাজার সেনা রাশিয়ার পশ্চিমে কুরস্ক অঞ্চলে মোতায়েন করেছে, যেখানে গত বছর ইউক্রেন একটি আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে এলাকাটি দখল করেছিল। কিয়েভের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি সেনা নিহত বা আহত হয়েছে।
যদিও শুরুতে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া এই সেনা মোতায়েনের খবর অস্বীকার করেছিল। পরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত অক্টোবরে এ বিষয়ে সরাসরি অস্বীকার করেননি। একই সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার এক কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের সেনা মোতায়েন আইনসিদ্ধ।
উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার এই বাড়তি সহযোগিতা ২০২৪ সালের জুনে পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরের পর আরও বৃদ্ধি পায়। ওই সময় দুই দেশের নেতারা ‘সম্পূর্ণ কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন, যার মধ্যে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।