পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একটি ট্রেন হাইজ্যাক করে কয়েক ডজন যাত্রীকে জিম্মি করেছে। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী এখন জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে এবং এখনও পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে।
ট্রেনটির অবস্থা
জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি কয়েকশ যাত্রী নিয়ে বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পেশাওয়ার শহরের দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটিতে পাকিস্তানি সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্যও ছিলেন, যারা ছুটিতে যাচ্ছিলেন।
হামলার বিবরণ
বিচ্ছিন্নতাবাদীরা প্রথমে রেললাইন উড়িয়ে দেয় এবং ট্রেনটির ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে ট্রেনের চালক নিহত হন এবং ট্রেনটি একটি সুড়ঙ্গের ভেতর আটকা পড়ে। এরপর তারা ট্রেনটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। উদ্ধার হওয়া কিছু যাত্রী জানান, গুলি শুরু হলে তারা নিচে ঝুঁকে পড়েন। অনেকে আহত ও নিহত যাত্রীদের কথা উল্লেখ করেছেন।
উদ্ধার অভিযান
পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী জিম্মিদের উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। বিশেষ বাহিনী ও হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। সূত্রমতে, ২৭ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়েছে। তবে কিছু জিম্মির পাশে আত্মঘাতী বোমা পরা হামলাকারীরা থাকায় উদ্ধার অভিযান জটিল হয়ে পড়েছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাবি
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বেলুচ রাজনৈতিক বন্দি, কর্মী ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে। গোষ্ঠীটি অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এই ব্যক্তিদের অপহরণ করেছে। তাদের দাবি না মানলে জিম্মিদের হত্যা করার হুমকিও দিয়েছে তারা।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি হামলাকারীদের পাকিস্তানের ‘শত্রু’ আখ্যা দিয়ে তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করার অঙ্গীকার করেছেন।
এখনও পরিস্থিতি অস্থিতিশীল রয়েছে এবং উদ্ধার অভিযান চলমান। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং জিম্মিদের নিরাপদে উদ্ধারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স