দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের একটি সিঙ্কহোলে (ভূমিধসের গর্ত) পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় গাংডং জেলার একটি সড়ক হঠাৎ ধসে পড়লে মোটরসাইকেল চালক ওই ব্যক্তি গর্তে তলিয়ে যান।
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ত্রিশের কোটার ওই ব্যক্তির মরদেহ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উদ্ধার করা হয়েছে। যেখানে তিনি গর্তে পড়েছিলেন, তার প্রায় ৫০ মিটার (১৬৪ ফুট) ভেতরে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ড্যাশক্যাম ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রাফিক সিগন্যালের কাছে হঠাৎ সড়ক ধসে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক গর্তে পড়ে যাচ্ছেন, আর তার সামনে চলা একটি গাড়ি অল্পের জন্য রক্ষা পায়। ওই গাড়ির চালকও আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে উদ্ধারকারীরা গর্তের ভেতর মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল খুঁজে পান। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গর্তটির ব্যাস ও গভীরতা প্রায় ২০ মিটার।
গাংডং ফায়ার স্টেশনের প্রধান কিম চ্যাং-সোপ এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, গর্তের ভেতরে প্রায় ২ হাজার টন মাটি ও পানি জমে আছে। তবে এখন পর্যন্ত এই সিঙ্কহোলের কারণ জানায়নি কর্তৃপক্ষ।
সিউল সিটি সরকারে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১০ বছরে শহরটিতে ২২৩টি সিঙ্কহোলের ঘটনা ঘটেছে। অবকাঠামো ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, পুরনো বা ক্ষয়ে যাওয়া পাইপলাইন, দীর্ঘমেয়াদি ভূমিধস এবং খননকাজের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে।
প্রাকৃতিকভাবে চুনাপাথর বা খড়িমাটির শিলাস্তর ক্ষয়ে গেলে সিঙ্কহোল তৈরি হতে পারে। কখনও এই প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে ঘটে, আবার কখনও শিলাস্তরের নিচের স্তর ক্ষয়ে গেলে উপরিভাগে কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। হঠাৎ করেই মাটি ধসে পড়ে, যাকে বলা হয় ‘কোল্যাপ্স সিঙ্কহোল’।
এছাড়া খননকাজের মতো মানবসৃষ্ট কারণেও মাটি ধসে সিঙ্কহোল তৈরি হতে পারে।
গত জানুয়ারিতে জাপানের ইয়াশিও শহরে একটি সিঙ্কহোলে ট্রাক পড়ে গেলে চালক নিখোঁজ হন। আর গত আগস্টে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ফুটপাতের সিঙ্কহোলে এক নারী তলিয়ে গেলে এক সপ্তাহ পর তার খোঁজ বন্ধ করে দেন উদ্ধারকারীরা।
এই ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় সড়ক অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত সিঙ্কহোলটির কারণ তদন্ত করছে।
সূত্র: বিবিসি