এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বিধ্বস্ত হওয়া ফ্লাইট যেন অনেক স্বপ্ন আর অপেক্ষার নির্মম পরিণতি। বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি বিধ্বস্ত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বিমানের ২৪২ আরোহীর কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম।
এই যাত্রীদের একজন ছিলেন সদ্যবিবাহিত খুশবু রাজপুরোহিত। রাজস্থানের বালোতারা জেলার আরাবা গ্রামের মেয়ে খুশবু চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিয়ে করেন লন্ডনে অধ্যয়নরত মানফুল সিংকে। বিয়ের পর এটাই ছিল তাদের প্রথম সাক্ষাতের সুযোগ। সেটি আর হলো না।
খুশবুর বাবা মদন সিং রাজপুরোহিতকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মেয়ের সঙ্গে শেষ কথাও বলতে পারেননি তিনি। বিমানের ২৪২ আরোহীর মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, একজন কানাডীয় এবং সাতজন পর্তুগিজ নাগরিক।
রাজস্থান রাজ্যের জন্যও ছিল এটি এক বড় ক্ষতির দিন। রাজ্য থেকে বিমানে ছিলেন ১১ জন। তাদের মধ্যে দুজন ব্রিটেনে রাঁধুনি হিসেবে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। আরও ছিলেন একজন মার্বেল ব্যবসায়ীর ছেলে ও মেয়ে।
দুর্ঘটনা ঘটে দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যে বিমানটি উচ্চতা হারাতে শুরু করে। তখন বিমানটি প্রায় ৮২৫ ফুট উচ্চতায় ছিল। এই সময় একটি ‘মে ডে’ (জরুরি সহায়তা) সংকেত পাঠানো হয় পাইলটের পক্ষ থেকে। এরপরই সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ অগ্নিগোলক।
দশ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রার জন্য বিমানটিতে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টনের বেশি অত্যন্ত দাহ্য অ্যাভিয়েশন জ্বালানি। ফলে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা বিশাল অগ্নিকাণ্ডে রূপ নেয়। শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার ওপর কয়েক ঘণ্টা ধরে আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলতে থাকে।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ও রাজা চার্লস গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ব্রিটেন ও ভারতের পররাষ্ট্র দফতর যৌথভাবে উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছে।
সূত্র: এনডিটিভি