X
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪
৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশ পরিচিতি: রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৩০ মার্চ ২০২৩, ০৭:০০আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৭:০০

পৃথিবীর মানচিত্রের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার এক দশকের মধ্যেই ক্ষমতাধর বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে দেশটি।

তেল, গ্যাস ছাড়াও বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদের কারণেই ১৯৯৮ সালের অর্থনৈতিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পেরেছিল দেশটি। তবে ২০১৪ সালে তেলের দাম কমে যাওয়ায় দেশটির দীর্ঘ মেয়াদে প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। তবে ইউরোপের চাহিদার বেশিরভাগ জ্বালানি এখনও সরবরাহ করে দেশটি।

২০০০ সাল থেকেই রাশিয়ার প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ভ্লাদিমির পুতিন। শুরু থেকেই দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও সম্প্রচারমাধ্যমগুলোতে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে জনগণের মাঝে উগ্র জাতীয়তাবাদ ও পশ্চিমাবিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলেন তিনি।

এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেনের ওপর রুশ নিয়ন্ত্রণ কায়েমের চেষ্টা করেন পুতিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ইউরোপের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ এটি।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • নাম: রাশিয়ান ফেডারেশন
  • রাজধানী: মস্কো
  • আয়তন: ১ কোটি ৭০ লাখ ৯৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার
  • জনসংখ্যা: ১০ কোটি ৪৭ লাখ
  • ভাষা: রুশ এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ও স্থানীয় ভাষা
  • গড় আয়ু: পুরুষদের ৬৬ বছর, নারীদের ৭৬ বছর

 

ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: রয়টার্স

নেতৃত্ব

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়ে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পরে চার বছর মেয়াদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপরে আবার ২০১৮ সালে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সম্প্রচারমাধ্যম ও অন্যান্য সংস্থাগুলোতে কঠোর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে তার প্রশাসন। উগ্র জাতীয়তাবাদী পন্থা অবলম্বন করে সোভিয়েত যুগের ক্ষমতা পুনরায় বহালের চেষ্টার প্রতি জনগণের সমর্থন তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যান তিনি।

রাশিয়াকে ১৯৯০-এর দশকের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট থেকে বের করে বৈশ্বিক ক্ষমতাধর দেশে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে শক্তিশালী নেতা হিসেবে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন তিনি। মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর বৈরী আচরণের বিপক্ষে রাশিয়ার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগ দেন তিনি।

দেশটির বিভিন্ন সংস্থা ও গণতন্ত্রকে দমিয়ে রেখে ধনিক শ্রেণির দ্বারা দেশ পরিচালনার কারণে একাধিকবার বিরোধীপক্ষ ও সমালোচকদের রোষের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে।

ইউক্রেনে আক্রমণের পর রাশিয়ার প্রায় সব স্বাধীন সংবাদমাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে। ছবি: রয়টার্স

সম্প্রচারমাধ্যম

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন হামলার পর থেকে রাশিয়ার প্রায় সব স্বাধীন সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চালু থাকা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদমাধ্যমগুলো পশ্চিমা ও ইউক্রেনবিরোধী প্রচারণায় সরকারকে সহযোগিতা করছে। এমনকি অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নিয়ন্ত্রণ কায়েম রেখেছে দেশটির সরকার।

 

দেশটির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

১৫৪৭: রাশিয়ায় জারতন্ত্র চালু হয়। রুশ সাম্রাজ্যের প্রথম জার ছিলেন মস্কোর গ্র্যান্ড প্রিন্স চতুর্থ ইভান।

১৬৮৯-১৭২৫: রুশ সাম্রাজ্যের সুদূরপ্রসারী সংস্কার প্রবর্তন করেন পিটার দ্য গ্রেট।

১৭৯৮-১৮১৫: ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় জোটে অংশ নেয় রাশিয়া। ১৮১২ সালে নেপোলিয়নকে পরাজিত করে উৎখাত করে।

১৮৫৩-৫৭: অটোমান সাম্রাজ্যের ভূখণ্ড দখল করতে গিয়ে ক্রিমিয়া যুদ্ধে পরাজিত হয়।

১৯০৪-০৫: মঞ্চুরিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তারের কারণে জাপানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ১৯০৫-এর বিপ্লবের কারণে রুশ পার্লামেন্ট ডুমা ও সংবিধান প্রবর্তন করতে বাধ্য হন জার দ্বিতীয় নিকোলাস।

১৯১৪: বলকান অঞ্চল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে এর প্রভাব লক্ষ্যণীয়। এ কারণে বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পক্ষে যুদ্ধ করে রাশিয়া।

স্ট্যালিনের ছবি নিয়ে মস্কোতে কমিউনিস্টপন্থীদের মিছিল। ছবি: রয়টার্স

১৯১৭: জার দ্বিতীয় নিকোলাসকে উচ্ছেদ করা হয়। বিপ্লবের মাধ্যমে লেনিনের নেতৃত্বাধীন বলশেভিক দল ক্ষমতায় এসে সরকার গঠন করে।

১৯১৮-২২: রাশিয়ার রেড আর্মি ও কমিউনিস্ট-বিরোধীদের সংঘাতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।

১৯২২: রুশ সাম্রাজ্যের অবশিষ্টাংশকে সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে পুনর্গঠন করে বলশেভিক দল।

১৯৪৫: জার্মানির নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে মিত্র পক্ষের বিজয়ের মাধ্যমে পূর্ব ও মধ্য ইউরোপ এবং বলকান অঞ্চলে সোভিয়েত আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির পরে পশ্চিমাদের সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের দীর্ঘ স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা হয়।

মস্কোর রেড স্কয়ারে রুশ সেনাবাহিনীর প্যারেড। ছবি: রয়টার্স

১৯৫৩: স্বৈরশাসক জোসেফ স্ট্যালিনের মৃত্যুর পরে দেশটিতে দমনমূলক রাজনীতি কিছুটা কমলেও কমিউনিস্ট দল দৃঢ়ভাবে ক্ষমতায় বহাল থাকে।

১৯৯১: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে রাশিয়া। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ থাকা ইউক্রেন, বেলারুশসহ অন্যান্য দেশ মিলে কমনওয়েলথ অব ইনডেপেন্ডেন্ট স্টেটস গঠন করে।

২০০০: ভ্লাদিমির পুতিন প্রেসিডেন্ট হয়ে রাশিয়াকে পশ্চিমাবিরোধী, উগ্র জাতীয়তাবাদী ও স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেন।

২০১৪: ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া।

২০১৫: সিরিয়ার চলমান গৃহযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সমর্থন করে অস্ত্র ও সামরিক সহযোগিতা দেয় রাশিয়া।

২০২২: রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ইউরোপের সব চেয়ে বড় যুদ্ধ এটি।

/এটি/এএ/
সম্পর্কিত
রাশিয়ায় বন্যা, শত শত ঘরবাড়ি প্লাবিত
ইরানে পাল্টা হামলা না চালাতে ইসরায়েলকে ক্যামেরনের আহ্বান
চাসিভ ইয়ার দখল করতে চায় রাশিয়া: ইউক্রেনীয় সেনাপ্রধান
সর্বশেষ খবর
সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিলেন আরও ১২ বিজিপি সদস্য
সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিলেন আরও ১২ বিজিপি সদস্য
রবিনিয়ো-সোহেল-এমফনের নৈপুণ্যে কিংস সেমিফাইনালে
রবিনিয়ো-সোহেল-এমফনের নৈপুণ্যে কিংস সেমিফাইনালে
রেমিট্যান্স বিতরণ নিয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংক ও নগদের চুক্তি
রেমিট্যান্স বিতরণ নিয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংক ও নগদের চুক্তি
উপজেলা নির্বাচন: মনোনয়নপত্রের হার্ড কপি জমা বাধ্যতামূলক নয়
উপজেলা নির্বাচন: মনোনয়নপত্রের হার্ড কপি জমা বাধ্যতামূলক নয়
সর্বাধিক পঠিত
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
বিসিএস পরীক্ষা দেবেন বলে ক্যাম্পাসে করলেন ঈদ, অবশেষে লাশ হয়ে ফিরলেন বাড়ি
বিসিএস পরীক্ষা দেবেন বলে ক্যাম্পাসে করলেন ঈদ, অবশেষে লাশ হয়ে ফিরলেন বাড়ি
চাসিভ ইয়ার দখল করতে চায় রাশিয়া: ইউক্রেনীয় সেনাপ্রধান
চাসিভ ইয়ার দখল করতে চায় রাশিয়া: ইউক্রেনীয় সেনাপ্রধান
ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন: সবাই সব জেনেও ‘চুপ’
ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন: সবাই সব জেনেও ‘চুপ’