রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছানোর জন্য রাশিয়ার হাতে পর্যাপ্ত শক্তি ও সম্পদ আছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না। রবিবার (৪ মে) প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার রাশিয়ান সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্থলযুদ্ধ এবং শীতল যুদ্ধের পর রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘাত। এ যুদ্ধে হাজার হাজার সেনা নিহত ও আহত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক তথ্যচিত্রে পুতিনকে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে তিনি বলেন, তারা আমাদের ভুল করাতে চেয়েছিল। কিন্তু সেসব অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। আশা করি ভবিষ্যতেও হবে না। ২০২২ সালে আমরা যা শুরু করেছি, তা যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছানোর জন্য আমাদের হাতে পর্যাপ্ত শক্তি ও সম্পদ আছে।
পুতিন এই যুদ্ধকে পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের একটি বিভাজনের মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের পর ন্যাটো সম্প্রসারণ ও রাশিয়ার প্রভাব বলয়ে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে অপমান করেছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধকে ‘রক্তপাত’ বলে অভিহিত করে বারবার এর অবসান চেয়েছেন। তবে ক্রেমলিন বলেছে, এই সংঘাত এতটাই জটিল যে দ্রুত সমাধান করা কঠিন।
রাশিয়ার সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে পুতিনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। এতে পুতিনকে ক্রেমলিনের নিজস্ব রান্নাঘরে চকলেট ও রাশিয়ার দুধের পানীয় পরিবেশন করতে দেখা গেছে।
২০০২ সালে মস্কোর নর্ড-অস্ট থিয়েটারে চেচেন বিদ্রোহীদের জিম্মি সংকটের সময় প্রথমবারের মতো প্রার্থনায় নতজানু হওয়ার কথা উল্লেখ করেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে কোনও রাজনীতিবিদ মনে করি না। আমি লক্ষাধিক রাশিয়ান নাগরিকের মতোই একই বাতাসে শ্বাস নিই। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঈশ্বর করুন, যেন এটি যতদিন সম্ভব চলতে থাকে।’
পুতিন ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি জোসেফ স্টালিনের পর দীর্ঘতম সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা রাশিয়ান নেতা।