X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতে গিয়ে হা-হুতাশ করছে ছিটমহলবাসী

বিদেশ ডেস্ক
১২ এপ্রিল ২০২১, ২০:২১আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২১, ২১:০০
image

ছিটমহল বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া বহু নাগরিকের মধ্যে হতাশা ভর করছে। পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার দিনহাটা আবাসন কেন্দ্রে বসবাস করা অন্তত ৫৮টি পরিবারের দিন কাটছে দুঃখ কষ্টে। গত ৬ বছরে দুইটা লোকসভা (একটা উপনির্বাচন), একটা পঞ্চায়েত এবং আরও একবার বিধানসভায় ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলেও এসব পরিবারের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ছিটমহলের রাষ্ট্রহীন জীবনের কষ্ট অতীত হলেও তারা বলছেন ভারতে যাওয়ার পর তারা সব হারিয়েছেন। আবারও ফিরতে চান বাংলাদেশে। সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ছিটমহলবাসীদের এই হতাশার কথা।

গত ৮ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দিনহাটা আবাসন কেন্দ্রে যান টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদক। সেখানে যাওয়ার পর বাসিন্দাদের হতাশা ও কষ্টের আর্তনাদ দেখতে পাওয়ার কথা জানান তিনি। ওই আবাসনের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী আর্য়ুবেদ চিকিৎসক ওসমান গনি বলেন, ‘আমাদের ঘরের কোনও কাগজপত্র নেই। তাছাড়া কর্মসংস্থান নিয়েও কোনও প্রতিশ্রুতি রাখেনি সরকার।’ ওসমানের বাবা-মা বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারিতেই থেকে গেছেন। তিনি বলেন, ‘ওই সময়ে (ভারত) সরকার জানিয়েছিলো যা বাজেট রয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। আর এখন এখানে আসা সবাই দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে।’

ওসমান জানান, নিজের দেশ মনে করেই ভারতে যান তিনি। বলেন, ‘ভেবেছিলাম ধনী দেশ, গেলে লাভ হবে। এখন মনে হচ্ছে ওখানেই (বাংলাদেশে) ভালো ছিলাম। এসে ভুল করেছি। সীমান্তে নিয়ে ছেড়ে দিলে ওপারেই চলে যাবো।’

ওই আবাসনের আরেক বাসিন্দা আবু তাহেরের সংসারে রয়েছেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে। দিনমজুরের কাজ করেই সংসার চালান তিনি। কাজ না পেলে রোজগারও থাকে না তার। খরচ চালাতে অনেককেই এখন দিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে পাড়ি দিতে হয়েছে।

১৫০ নম্বর দাসিয়ারছড়া ছিটমহল থেকে যাওয়া বহু পরিবার রয়েছেন দিনহাটার ওই আবাসন কেন্দ্রে। তার আগে সবাই ছিলেন কৃষিমেলার সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে। আবাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা নারায়ণ চন্দ্র বর্মন, নরেশ বর্মন, কামিনী বর্মন, রঞ্জিত বর্মন সবাই যেন একই ক্ষোভ উগড়ে দিলেন।

৩০ বছর বয়সী কামিনী বর্মনের সংসারে চারজন। তিনি দাবি করেন ভারত সরকার তাদের ভূমিহীন করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘পুরনো ছিটমহলে ফিরিয়ে দিলেও আমি চলে যাবো।’ নরেশ বর্মন বলেন, ‘আমাদের হাজারো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও একটাও পূরণ হয়নি। জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়েও কাজ হয়নি।’

গত বছরের সেপ্টেম্বরে দিনহাটার আবাসন কেন্দ্রে নেওয়া হয় পুরনো ছিটমহলবাসীদের। তারপর থেকে শুধুই হতাশা। জন্ম সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা, স্বাস্থ্য সেবা পেতেও হয়রানির কথা জানান তারা। একাধিকবার বিধবাভাতার আবেদন করেও পাননি ৫৯ বছরের গীতা বর্মন। ৭২ বছরের রজনীকান্ত বর্মন বলেন, ‘ওখানে বিঘে ছয় জমিও ছিল। এদেশে এসে পায়ের তলার মাটিটা সরে গিয়েছে।’

উল্লেখ্য, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘ দিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি ছিটমহল বিনিময় হয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতের ১১১টি আর ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল নিজ নিজ দেশের সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়া হয়। এসব ছিটমহলবাসীদের দেশ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

/জেজে/
সম্পর্কিত
পাচার হওয়া বোনকে নিতে এসে কলকাতায় অসহায় দশায় চট্টগ্রামের তরুণ
আম আদমি পার্টির সাথে জোট, দিল্লি কংগ্রেস প্রধানের পদত্যাগ
ভারতের মণিপুরে আবারও জাতিগত সহিংসতা
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ