X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

আবার বাংলাদেশের স্লোগান ধার করলো পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল  

দিল্লি প্রতিনিধি 
২০ জুলাই ২০২২, ১৯:৫৩আপডেট : ২০ জুলাই ২০২২, ১৯:৫৩

প্রথমে ‘খেলা হবে’। এরপর ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। এখন ‘অমর একুশে’। 

মাত্র দেড় বছরের মধ্যে এই নিয়ে পরপর তিনবার বাংলাদেশের জনপ্রিয় স্লোগান ধার করলো পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আগামীকাল ২১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) কলকাতায় তারা যে বার্ষিক মহাসমাবেশের আয়োজন করেছে, তার মূল স্লোগানটাই দেওয়া হয়েছে ‘অমর একুশে’। সভামঞ্চের ফেস্টুনে, ব্যানারে, পোস্টারে সর্বত্র জ্বলজ্বল করছে এই শব্দবন্ধ।  

তবে হ্যাঁ, এই ‘একুশে’ হালকা শীতের ফেব্রুয়ারির নয় – বরং ভরা বর্ষার জুলাইয়ের।   

বলাই বাহুল্য. ‘অমর একুশে’ শব্দটি বহু বহু বছর ধরে বাংলাদেশে একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদ দিবসের অনুষঙ্গেই ব্যবহার করা হয়ে এসেছে – যে দিনটি এখন জাতিসংঘের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবেও পালিত হয়ে থাকে। 

আর প্রতি বছরের ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসও তাদের ‘শহীদ দিবস’ পালন করে থাকে, সেই উপলক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় বিশাল জনসভার আয়োজন করে থাকেন। ১৯৯৩ সালে তিনি যখন যুব কংগ্রেসের নেত্রী ছিলেন, তখন সচিত্র ভোটার কার্ডের দাবিতে মিছিল করে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৩জন দলীয় কর্মী নিহত হয়েছিলেন – তাদের স্মরণেই তিনি প্রতি বছর এই দিনটিতে কলকাতায় সভা করে থাকেন। কংগ্রেস ছেড়ে নিজের দল তৃণমূল গঠনের পরও সেই রেওয়াজ ভাঙেননি, বরং ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চই হয়ে উঠেছে দলের শক্তি প্রদর্শনের বাৎসরিক প্ল্যাটফর্ম।  

তবে বিগত প্রায় তিন দশক ধরে উদযাপিত হয়ে এলেও কলকাতায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে ‘অমর একুশে’র ব্যবহার এই প্রথম।  

এই স্লোগান ব্যবহারের আইডিয়া কার, তা জানতে বাংলা ট্রিবিউনের পক্ষ থেকে আজ তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, কিন্তু বিষয়টি অস্বস্তিকর এটা বুঝতে পেরে তারা সবাই উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন। ‘অমর একুশে’র অলিখিত কপিরাইট যে বাংলাদেশেরই এবং সেটা ব্যবহার করার আগে সৌজন্যের খাতিরেও কোনও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা হয়নি, সেটাই আসলে তাদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। 

তবে তারা কেউ কেউ বলেছেন, আগামীকালের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো এই ‘অমর একুশে’র একটা ব্যাখ্যা দেবেন এবং বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই যে তারা এটি ব্যবহার করেছেন, সেটাও ‘অন রেকর্ড’ জানিয়ে দেবেন।  

গত বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল যে ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল – সেটিও প্রথম ব্যবহার করেছিলেন নারায়ণগঞ্জের ডাকাবুকো আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান।  

এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা তৃণমূলের ‘যুবরাজ’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে একটি নিজস্ব ফুটবল ক্লাব চালু করার সময় স্লোগান দেন– ‘রাজনীতি যার যার, ফুটবল সবার’। তার ফুটবল ক্লাবে সব রাজনৈতিক মত ও পথের লোকেরাই যে স্বাগত, এটা বোঝাতেই তিনি সেই স্লোগান দিয়েছিলেন – তবে সেটা যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ স্লোগান থেকেই ধার করা, তা বলার অপেক্ষা রাখেনি। 

বার বার তিনবারে এসে তৃণমূল এখন পিক করেছে ‘অমর একুশে’র চিরচেনা ও বিখ্যাত স্লোগানটি। এখন এই ‘শব্দঋণে’র জন্য দলের তরফে কোনও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা হয় কি না, দেখার বিষয় সেটাই।  

 

/এএ/
সম্পর্কিত
লোকসভা নির্বাচন: প্রথম ধাপে পশ্চিমবঙ্গের ৩ আসনে ভোট আজ
মানব ও সুপারি পাচারের অভিযোগে ভারতে শুল্ক কর্মকর্তা গ্রেফতার 
ভুয়া পরিচয়ে ভারতে বসবাস বাংলাদেশির, ৪ বছরের কারাদণ্ড
সর্বশেষ খবর
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পুরস্কার পেলেন কুবির চার শিক্ষার্থী
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পুরস্কার পেলেন কুবির চার শিক্ষার্থী
গরমে বেড়েছে অসুখ, ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি রোগী হাসপাতালে
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগরমে বেড়েছে অসুখ, ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি রোগী হাসপাতালে
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ এপ্রিল, ২০২৪)
মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা ৫ টন কফি পাউডার জব্দ
মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা ৫ টন কফি পাউডার জব্দ
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন