ভারতের উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় ভয়াবহ তুষারধসের ফলে বরফের নিচে আটকা পড়েছেন অন্তত ২৫ জন শ্রমিক। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত বরফের নিচে আটকা পড়া অন্তত ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরকিউ) এর ওই শ্রমিকরা সড়ক নির্মাণের কাজ করছিলেন। বদ্রীনাথ মন্দির থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে, সীমান্তবর্তী মানার গ্রামে শ্রমিকদের শিবিরের ওপর ওই তুষারধস হয়।
ওই শিবিরে মোট ৫৭ জন শ্রমিক ছিলেন, যার মধ্যে ২২ জন কোনও রকমে তুষারধস থেকে পালাতে সক্ষম হন।
উদ্ধার কাজে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও আইটিবিপির প্রায় ৬৫ জন কর্মী যুক্ত রয়েছেন। ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স এবং উদ্ধারকারী দলের উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ চালাতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।
উত্তরাখণ্ডের পুলিশ মহাপরিচালক দীপম শেঠ এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযান চলছে গত দুই ঘণ্টা ধরে। মূল চ্যালেঞ্জ হলো খারাপ আবহাওয়া। প্রবল তুষারপাত ও শক্তিশালী বাতাস বইছে। রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা বরফ কাটার যন্ত্র ব্যবহার করছি রাস্তা খুলতে।
চামোলি জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সন্দীপ তিওয়ারি জানিয়েছেন, পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। তবে টানা তুষারপাত ও বৃষ্টির কারণে গাড়ি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি আবহাওয়া স্বাভাবিক হবে, তত দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালানো হবে।’
মানা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাবেক সদস্য বিবিসিকে জানিয়েছেন, তুষারধসের স্থানে স্থায়ীভাবে কেউ বসবাস করেন না। শুধু শীতকালে সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য শ্রমিকেরা সেখানে থাকেন। এর পাশাপাশি কিছুসংখ্যক সেনাসদস্যও সেখানে অবস্থান করেন। ওই এলাকায় দুই দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছিল বলে শোনা গেছে। তুষারধসের সময় শ্রমিকেরা তাঁদের শিবিরের মধ্যে ছিলেন।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ঘটনাটি নিয়ে দু:খ প্রকাশ করেছেন এবং জানিয়েছেন যে উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান চলছে।
সকালে ভারতের আবহাওয়া দফতর উত্তরাখণ্ডসহ বেশ কয়েকটি পার্বত্য অঞ্চলের জন্য 'অরেঞ্জ অ্যালার্ট' জারি করেছিল, যেখানে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত ২০ সেমি পর্যন্ত অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।