ইরানের সেনাবাহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসলামি প্রজাতন্ত্রে হামলা চালায় তাহলে ইরান ইসরায়েলি দুটি শহরকে মাটিতে মিশিয়ে দেবে। সোমবার ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪০তম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এই হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক বিষয়ক উপ-প্রধান ইয়াদোল্লাহ জাভানি। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইরানের যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত তৎকালীন শাসক শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি পদত্যাগে বাধ্য হলে আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ইরানকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেন। দিনটিকে ইসলামি বিপ্লবের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনার মধ্যেই এবারের বিজয় দিবস উদযাপিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও আরববিশ্ব ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই সন্দেহের চোখে দেখে। তাদের আশঙ্কা, খোমেনির বিপ্লবী চিন্তাধারা মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গিদের অনুপ্রাণিত করবে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও তার আরব মিত্ররা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব খর্ব করার চেষ্টা করছে। ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনে উভয় পক্ষ ছায়াযুদ্ধে লড়ছে।
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে ইয়াদোল্লাহ জাভানি বলেন, এতো রক্ষণাত্মক ও সামরিক সরঞ্জাম থাকার পরও যুক্তরাষ্ট্রের সাহস নেই আমাদের লক্ষ্য করে একটি গুলি ছোড়ার। কিন্তু তার যদি কখনও আমাদের ওপর হামলা চালায় তাহলে আমরা তেল আবিব ও হাইফাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেব।
বিপ্লবের ৪০তম বার্ষিকীতে আজাদি স্কয়ারে দেওয়া ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, গোটা বিশ্বই দেখেছে ইরানের সদিচ্ছা ও সহযোগিতায় সিরিয়া, ইরাক ও লেবাননের জনগণ বিজয় অর্জন করেছে এবং ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনের জনগণ আগ্রাসী ও দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইরানকে বিচ্ছিন্ন করার মার্কিন উদ্যোগ ব্যর্থ হলে জানিয়েছে রুহানি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে জয়ী হতে আমরা দেব না। ইরানের জনগণ কিছু অর্থনৈতিক পড়েছে কিন্তু আমরা একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।
রুহানি আরও বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রসহ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির জন্য তেহরান কারো অনুমতি নেয় না এবং ভবিষ্যতেও নেবে না।
ইসলামি বিপ্লবের ৪০তম বিজয় দিবস উদযাপনে বিভিন্ন শহরের রাস্তায় যোগ দিয়েছে লাখ লাখ ইরানি নাগরিক। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নতুন ইরান গড়ার স্বপ্ন নিয়ে রাজধানী তেহরানের আজাদি স্কয়ারে জড়ো হয় লাখ লাখ ইরানি। এসব ইরানি নাগরিক জাতীয় পতাকা নাড়িয়ে মার্কিন মতাদর্শের মৃত্যু কামনা করে স্লোগান দেয়। এছাড়া বিপ্লবের বিজয় দিবস উপলক্ষে নিজেদের নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়।