সিরিয়ার অধিকৃত গোলান মালভূমির কাছে ইসরায়েলের জমি দখলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতার, ইরাক এবং সৌদি আরব। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দোহা ইসরায়েলের এই অনুপ্রবেশকে বিপজ্জনক উন্নয়ন এবং সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও সংহতির ওপর স্পষ্ট আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করে যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর আরোপিত বাস্তবতার নীতি,যার মধ্যে সিরিয়ার জায়গা দখলের চেষ্টাও অন্তর্ভুক্ত, অঞ্চলটিকে আরও সহিংসতা এবং উত্তেজনার দিকে ঠেলে দেবে।
রবিবার বাশার আল-আসাদ সরকারকে সশস্ত্র বিরোধীরা ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই সিরিয়ায় আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল।
সোমবার সৌদি আরব ইসরায়েলের পদক্ষেপগুলির নিন্দা জানিয়ে বলেছে যে এটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ধারাবাহিকতা এবং সিরিয়ার নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাগুলি ধ্বংস করার ইসরায়েলের প্রতিজ্ঞা প্রমাণ করে।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলি পদক্ষেপের নিন্দা জানানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে গোলান মালভূমি একটি অধিকৃত আরব অঞ্চল।
বাগদাদও একই ধরনের সমালোচনা করেছে। বলেছে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ করেছে।
ইরাক জানিয়েছে, সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করুক, এই আগ্রাসনের নিন্দা করুক এবং এর অবসান ঘটাক।
রবিবার দ্রুত অগ্রসর হয়ে গোলান মালভূমি ও সিরিয়ার নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাফার জোন দখল করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কৌশলগত এলাকাটির কাছে পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে গোলান মালভূমির বেশিরভাগ অংশ দখল করে এবং ১৯৮১ সালে বেআইনিভাবে এই অঞ্চলটি অধিগ্রহণ করে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার আল-আসাদের পতনের পরপরই বাফার জোন দখলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নেতানিয়াহু বলেন, গোলান মালভূমি চিরকাল ইসরায়েলের সঙ্গে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ। তিনি তার প্রথম মেয়াদে এই অঞ্চলে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক আইন শক্তি প্রয়োগ করে জমি দখল কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ভূমি দখল জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিকও নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি ১৯৭৪ সালের ইসরায়েল-সিরিয়া বিচ্ছিন্নতা চুক্তির লঙ্ঘন।