যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার সমকামীদের একটি নাইটক্লাবে ৫০ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হওয়ার ঘটনাটি ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলা বলে মনে করছেন প্রত্যক্ষদর্শী। গুলিবর্ষণের সময় নাইটক্লাবে থাকা কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী তাদের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা কথা তুলে ধরেছেন।
ক্লাবে গুলিবর্ষণের পরই বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করেন এক বন্দুকধারী। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বন্দুকধারীর নাম ওমর মতিন। জিম্মি উদ্ধারের সময় বন্দুকযুদ্ধে ওমর মতিন নিহত হয়েছেন বলে পুলিশের দাবি।
স্থানীয় একটি টেলিভিশনকে গুলিতে নিহত এক ছেলের মা জানিয়েছেন, তার ছেলে তাকে মোবাইলে বার্তা পাঠায় যে, বন্দুকধারী তাদের চারদিকে ঘুরছে। সে আমাদের হত্যা করে ফেলবে।
হামলার পরই ক্লাবের ফেসবুকে পেজে বলা হয়, সবাই বেরিয়ে যান এবং দৌড়াতে থাকেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রোজি ফেবা স্থানীয় ওরল্যান্ডো স্যানিটেলকে বলেন, তার বন্ধবী তাকে বলেছিলেন কেউ মনে হয় গুলি করছে। কিন্তু তার মনে হয়েছিল এটা কোনও গান শুরুর অংশ। বন্দুকধারীর বন্দুক থেকে গুলি বর্ষণ দেখার আগ পর্যন্ত রোজি মনে করেছিলেন এটা সত্যিকার গুলির শব্দ নয়।
তবে রোজি তার বান্ধবীকে নিয়ে ক্লাব থেকে পালাতে পেরেছিলেন। তারা গুলিবিদ্ধ একজনকে ক্লাব থেকে বের হতে সহযোগিতাও করেন। এই দম্পতি আতঙ্কিত হলেও আঘাত পাননি।
রব রিক নামের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ক্লাব বন্ধ হওয়ার আগ মুহূর্তে রাত ২টার দিকে হামলা হয়। তিনি বলেন, সবাই তাদের গ্লাসে শেষ চুমুক দিচ্ছিলেন। তিনি জানান, ক্লাবে ওই মুহূর্তে শতাধিক মানুষ ছিলেন। গুলির শব্দ শুনে তিনি মেঝেতে শুয়ে পড়েন এবং হামাগুড়ি দিয়ে ডিজে বুথের দিকে এগিয়ে যান। ক্লাবের এক বাউন্সার একটি পার্টিশন ভেঙে ফেলেন। তা দিয়ে ক্লাবের পেছন দিকে অনেকে পালিয়ে যান।
যখন প্রথম গুলি হয় ক্রিস্টোফার হানসেন ছিলেন ভিআইপি লাউঞ্জে। তিনি জানান, আমি মনে করেছিলাম কেউ মজা করছে। তাতে সায় দিয়ে তিনি মেঝেতে শুয়ে প্লিজ প্লিজ বলে চিৎকারের অভিনয় করেন। কিন্তু যখন আমি গুলিবিদ্ধ হয়ে মানুষকে পড়ে যেতে দেখি, রক্ত দেখি, তখন প্রার্থনা শুরু করি যেন আমি গুলিবিদ্ধ না হই। সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
আরও পড়ুন:
ফ্লোরিডার নাইটক্লাবে হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক মন্তব্য করলেন হিলারি, ট্রাম্প
আইএসকে হটিয়ে দক্ষিণ মসুলে ইরাকি বাহিনী
/এএ/এসএ/