যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের সমকামীদের নাইটক্লাবে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান পার্টির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী হিলারি ক্লিনটন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেবেন বলে জানানো হয়েছে।
এক টুইটার বার্তায় হিলারি বলেন, ‘ফ্লোরিডা থেকে ওই বিধ্বংসী খবর শুনে ঘুম থেকে উঠলাম। আমরা আরও তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি। আর আমার চিন্তা হচ্ছে ওই ভয়াবহ হামলায় আক্রান্তদের জন্য।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘ফ্লোরিডায় এক ভয়াবহ সংঘটিত হলো। আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি। এসব কবে শেষ হবে? আমরা কবে কঠোর, বুদ্ধিমান এবং সজাগ হতে পারবো?’
ওই হামলার ঘটনায় মার্কিন পার্লামেন্টের স্পিকার পল রায়ান এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘আমরা ওই নৃশংস হামলার আক্রান্তদের জন্য প্রার্থনা করছি। আমাদের অবশ্যই হামলাকারী সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে হবে। কিন্তু আমরা আক্রান্ত এবং তাদের পরিবারকে ভুলবো না।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, বারাক ওবামা স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টা সময় আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেবেন।
স্থানীয় সময় শনিবার রাত দুইটার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ওরলান্ডো এলাকার পাল্স নাইটক্লাবে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের একটি সমকামী নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন। ওই হামলায় জড়িত সন্দেহভাজনের নাম ওমর মতিন বলে জানিয়েছে পুলিশ কর্তৃপক্ষ। ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫৩ জন। রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বন্দুকধারী হামলা চালানোর সময় ক্লাবে শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, আফগান বংশোদ্ভূত ওমর যুক্তরাষ্ট্রেই জন্মগ্রহণ করেন। মার্কিন কর্তৃপক্ষ কিছুদিন তার ওপর নজরদারি করলেও তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ ছিল না বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নাইটক্লাবের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে ওমর মতিনের গুলি বিনিময় হয়। এরপর ওমর নাইটক্লাবে অবস্থান করা লোকজনকে জিম্মি করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও জানায়, ওমর মতিনের কাছে একটি রাইফেল, একটি পিস্তল এবং দুটি সন্দেহজনক যন্ত্র ছিল।
স্থানীয় সময় আনুমানিক ভোর ৫টার দিকে এসডব্লিউএটিয়ের বিশেষ কমান্ডোরা জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য অভিযান চালান। কর্মকর্তারা জানান, ওই অভিযানে ওমর মতিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়।
অভিযানের পরপরই ওমরের বাসায় তল্লাশি চালানো হয়। ওমরের বাবা মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে বলেন, ‘এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সংযোগ নেই।’ তিনি জানান, তার ছেলে কয়েক মাস আগে মিয়ামিতে দুজন পুরুষকে চুম্বনরত অবস্থায় দেখে ভীষণ রাগান্বিত হয়। ওমরের বাবার ধারণা, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই ওমর ওই হামলার সিদ্ধান্ত নেয়।
এফবিআই কর্মকর্তা রন হপার বলেন, ‘তদন্তকারীরা চেষ্টা করছেন হামলার পেছনের মূল কারণটা খুঁজে বের করার জন্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা, নির্দিষ্ট মতাদর্শে (ইসলামি উগ্রপন্থা) উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্যক্তিগতভাবেই ওই হামলা চালানো হয়েছে। তবে আমরা সবকিছুই খুঁটিয়ে দেখছি।’
সূত্র: এবিসি নিউজ, এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুন:
আইএসকে হটিয়ে দক্ষিণ মসুলে ইরাকি বাহিনী
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলা
/এসএ/এএইচ/