প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন কারখানা স্থাপনে বিদেশি মালিকানার সুযোগ আরও বাড়িয়েছে ভারত। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছেন, এখন থেকে এ ধরনের কারখানায় ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি মালিকানা থাকতে পারবে। আগে এর পরিমাণ ছিলো ৪৯ শতাংশ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের আমদানি কমিয়ে আনার লক্ষে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
করোনাভাইরাস সংকটের কারণে ভারতের রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে নীতিনির্ধারকেরা প্রতিরক্ষা আমদানিসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় কমানোর তাগাদা শুরু করেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে ২০২০/২১ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা খাতে চার লাখ ৭১ হাজার কোটি রুপির বাজেট বরাদ্দ দেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এর মধ্যে এক লাখ কোটি রুপি বরাদ্দ রাখা হয় কেবল সরঞ্জাম ক্রয় খাতে।
শনিবার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে নির্মলা সীতারমন বলেন, এতে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যয় বিপুল পরিমাণে কমে যাবে এবং এই সরঞ্জাম উৎপাদনে ভারতকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলবে। তিনি বলেন, এছাড়াও এর মাধ্যমে আমদানি করতে না হওয়া অস্ত্রের তালিকাও সম্প্রসারিত হবে।
ভারতের এই পদক্ষেপ প্রতিরক্ষা খাতের বড় বড় উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ভালো সুযোগ বলে মন্তব্য করেছেন এসব প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করা ভারতীয় আইনজীবী অতুল পান্ডে। তিনি জানান, লকহেড মার্টিন কর্পোরেশন, বোয়িং, এমবিডিএ, রায়থিওন আরটিএক্স.এন ও দাসল্টের মতো বড় বড় কোম্পানির ভারতে বিনিয়োগ রয়েছে। নতুন পদক্ষেপের ফলে ভারতে এসব কোম্পানির বিনিয়োগ সম্প্রসারিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারত বিশ্বের শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ছিল। ওই সময়ে বিশ্বের মোট অস্ত্র আমদানির ১২ শতাংশই ভারত ঘরে এনেছে। রাশিয়া, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের শীর্ষ অস্ত্র সরবরাহকারী।
তবে এবছরের শুরুতে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতের অস্ত্র রফতানি পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই বছর ভারতের অস্ত্র রফতানির পরিমাণ ২৪০ কোটি মার্কিন ডলার।