আরব দেশগুলোর অধিকাংশ তরুণ নাগরিক মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যে এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সশস্ত্র সুন্নিপন্থী সংগঠন আইএস। তবে তারা মনে করেন, আইএসের খিলাফত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ব্যর্থ হবে। নতুন এক
জরিপের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক জরিপকারী সংস্থা পেন শোয়েন বারল্যান্ড ওই জরিপটি পরিচালনা করে। আরব ইয়ুথ সার্ভে ২০১৬-এ ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ৩ হাজার ৫০০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের ১৬টি দেশে জরিপ চালানো হয়। দেশগুলো হলো – আলজেরিয়া, বাহরাইন, মিশর, ইরাক, জর্দান, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, করক্কো, ওমান, ফিলিস্তিন, কাতার, সৌদি আরব, তিউনিশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, এবং ইয়েমেন।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় যুক্তরাজ্যের আইএস বিরোধী বিমান হামলা শুরু
নতুন জরিপ অনুযায়ী, আরব তরুণদের বেশিরভাগই আইএসের কর্মকাণ্ডের বিরোধী। এদের অন্তত ৮০ শতাংশ আইএস সমর্থনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। এমনকি আইএস যদি তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসে তারপরও তাদের সমর্থন না দেওয়ার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন অধিকাংশ আরব তরুণ।
জরিপের তথ্যে দেখা যায়, আরব তরুণদের প্রতি ৪ জনের মধ্যে তিনজনই আইএসের বিস্তৃতি সম্পর্কে অবগত। তবে আইএসের সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদী প্রতি ৬ জন তরুণের মধ্যে মাত্র একজন।
গত বছর ৩৭ শতাংশ আরব তরুণ মনে করতেন, আরবের শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রধান বাধা আইএস। এবার এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ এ, এখন ৫০ শতাংশ আরব তরুণ আইএসকে আরবের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি মনে করেন। আর গত বছর ১৯ শতাংশ আরব আইএসকে বিশেষ বাস্তবতায় সমর্থন দেওয়ার কথা জানালেও সেই হার কমে এবার দাঁড়িয়েছে ১৩তে। এখন কেবল ১৩ শতাংশ আরব আইএসকে শর্তযুক্ত সমর্থন দিতে রাজি আছেন যদি তারা সহিংসতার পথ পরিহার করেন। আরও পড়ুন: ‘সিরীয় শিশুদের লেবাননে দাসের মতো শ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে’
আরব তরুণদের এক চতুর্থাংশ মনে করেন, চাকরি আর সুযোগের সাম্যের অভাবেই তরুণরা আইএসের প্রতি ঝুঁকছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৩ শতাংশ মনে করেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেয়েও স্থিতিশীলতা বেশি জরুরি। মাত্র ২৮ শতাংশ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রচারণার পক্ষে মত দেন। এর আগে ২০১১ সালে ‘আরব বসন্ত’-এর সময়ে চালানো জরিপে দেখা যায় যে, ৯২ শতাংশ তরুণ আরব গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রচারণার পক্ষে মত দেন। আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের হাতে নিহত ২১ খ্রিস্টান
জরিপ চালানো ১৬টি দেশের মধ্যে ৮টিতেই বেকারত্বকে আইএস থেকেও বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কর্মক্ষেত্রের অপ্রতুলতাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নিয়োগের প্রধান কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী আরবদের এক-চতুর্থাংশই কর্মহীন। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন-এর মতে, প্রায় সাড়ে সাত কোটি তরুণ আরব বেকার। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, টাইমস অব ইন্ডিয়া
/এফইউ/বিএ/